সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে আসার জল্পনা দীর্ঘদিনের। নিজে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কোনও অবস্থান নেননি। প্রশ্ন করলেও সযত্নে পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। তবে থেমে নেই জল্পনা। এ বার এবিপি আনন্দ এবং সিএনএক্স-এর যৌথ সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এল, যা আরও উস্কে দিল রাজনীতির পিচে সৌরভের দাদাগিরির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা। সমীক্ষার পরিসংখ্যান অনুযায়ী মহারাজ রাজনীতিতে আসুন, এটা চান রাজ্যের ৭৭ শতাংশ মানুষ। অর্থাৎ বেহালার বীরেন রায় রোডের এই ক্রিকেট বিগ্রহের উপর রাজ্যের দায়িত্বভার সঁপে দিতে চান বাংলার সিংহভাগ নাগরিক।
আর এখানেই উঠে এসেছে আরও একটা প্রশ্ন— তা হলে বর্তমান রাজনীতিকদের উপর আস্থা কম রাজ্যবাসীর? এই প্রশ্নেরও মোটামুটি একটা উত্তর খোঁজার চেষ্টা হয়েছে ওই যৌথ সমীক্ষায়। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গ্রহণযোগ্যতা কতটা, তা নিয়ে তুল্যমূল্য একটা চিত্র উঠে এসেছে সমীক্ষায়। মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চান ৩৮ শতাংশ মানুষ। ১৯ শতাংশ রাজ্যবাসী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চান দিলীপ ঘোষকে। এ ছাড়া শুভেন্দু অধিকারীকে ১০ শতাংশ, অধীর চৌধুরীকে ৫ শতাংশ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৪ শতাংশ মানুষ দেখতে চান মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে।
প্রশ্ন হল, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় রাজনীতিতে এলে তিনি নিশ্চয়ই বিধায়ক বা সাংসদ হিসেবে আসবেন না। নিশ্চয়ই মুখ্যমন্ত্রীর মতো রাজ্য রাজনীতির শীর্ষ পদপ্রার্থী হিসেবেই তিনি ময়দানে নামবেন। এই সূত্রেই একটা সময় এমনও জল্পনা তৈরি হয় যে, বিজেপি-তে যোগ দেবেন দাদা এবং তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী করে ভোটে লড়বে বিজেপি। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে জয় শাহের সঙ্গে তাঁর সহাবস্থান সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।
তবে আচমকা স্ট্রোক হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় সেই জল্পনা কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। আবার পুরোপুরি স্তিমিত হয়েছে এমনটাও বলা যায় না। কারণ, ওই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে সৌরভের সঙ্গে কথা বলে এসেছিলেন। বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। অনেকেই হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেছেন সৌরভের সঙ্গে। শাসক-বিরোধী উভয় দলের নেতা-নেত্রীদের এই সাক্ষাৎ সৌজন্যমূলক বলে দাবি করা হলেও তার মধ্যেও পরোক্ষে রাজনীতি এক্কেবারেই ছিল না, এমন কথা বলা যায় না। বরং ভবিষ্যতের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই বর্তমানের এমন পদক্ষেপ,ব্যাখ্যা করতে পারেন অনেকে।
সমীক্ষা কখনওই ধ্রুব সত্য নয়। নমুনা বাছাইয়ের প্রক্রিয়া, অঞ্চল, বয়স, সময়, প্রশ্নের ধরন থেকে শুরু করে বহু বিষয়ে সামান্য হেরফের হলেও সমীক্ষার ফল অন্য রকম হতে পারে। আবার একটি অংশের মানুষের মতামত নিয়ে তাকে সামগ্রিক চিত্র হিসেবে অনেক মেনে নিতে চান না। তবে এই ধরনের সমীক্ষার মাধ্যমে আম জনতার মনোভাবের মোটের উপর একটা আভাস পাওয়া যায়। সেটা আন্তর্জাতিক মহলেও স্বীকৃত। এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে। ফোন নয়, সরাসরি কথা বলে নেওয়া হয়েছে মতামত। মত দিয়েছেন ৮ হাজার ৯৬০ জন। সংকীর্ণ স্তরে সমীক্ষার ফলাফলে পার্থক্য হওয়ার সম্ভাবনা ৩ শতাংশ এবং বৃহত্তর স্তরে এই সম্ভাবনা ৫ শতাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy