ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন করতে গিয়ে এক ভোটারের বাবার নামের গোলমাল দেখেছিলেন বিএলও। তাই ভোটারের কাছে কিছু নথি দেখতে চান। তার জেরেই বিএলও-কে লাগাতার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই ভোটারের বিরুদ্ধে। ঘটনায় বিএলও থানার দ্বারস্থ হয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে আনন্দপুর থানা এলাকায়। অভিযোগকারী বিএলও ওয়াসিম আক্রম পেশায় স্কুলশিক্ষক। তিনি ইমেল মারফত আনন্দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ পাঠান। শুক্রবার তার ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ওয়াসিম লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তিনি কসবা বিধানসভা এলাকায় ৩০৩ নম্বর পার্টে বিএলও হিসেবে নিযুক্ত। এই কাজ করতে গিয়ে আনন্দপুর থানা এলাকার নোনাডাঙায় এক ভোটারের বাড়িতে যান। ফর্মও দিয়ে আসেন। অভিযোগ, ফর্ম জমা নেওয়ার সময়ে অভিযুক্তের বাবার নামের ক্ষেত্রে গরমিল চোখে পড়ে তাঁর। সন্দেহ হওয়ায় তিনি ওই ব্যক্তির কাছে কিছু নথি দেখতে চান। এর পর থেকেই ওই ব্যক্তি ক্রমাগত তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগে বিএলও আরও জানিয়েছেন, ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে তাঁকে ফোন করে নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্ত। বাড়ি থেকে বেরোলে মারধরের পাশাপাশি তাঁর প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওয়াসিম জানান, সাত বার ফোন করা হয় ওই নম্বর থেকে। তিনি বলেন, ‘‘বিএলও-র কাজের জন্য এমনিতেই সব সময়ে বাড়ি থেকে বেরোতে হচ্ছে। নিজের কাজের জন্যও বাড়ি ফিরতে রাত হয়। স্বাভাবিক ভাবেই এই হুমকির জেরে আমি আতঙ্কিত। বাধ্য হয়েই পুলিশে যাই।’’
অভিযোগের ভিত্তিতে আনন্দপুর থানার পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে। সরকারি কর্মীকে তাঁর কাজ করতে বাধা, ভয় দেখানো, শান্তিভঙ্গের জন্য উস্কানি দেওয়া এবং অপমানের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে রাজ্যে একাধিক জায়গায় বিএলও-কে হুমকি এবং আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। খড়দহে এক বিএলও-র বাড়িতে হামলা করার অভিযোগ ওঠে। সুপ্রিম কোর্টও কয়েক দিন আগে বিএলও-দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক নির্দেশও দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)