Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Drowning Death

মৎস্য দফতরের পরিত্যক্ত পুকুরে ডুবে মৃত্যু শিশুর

বিনোদের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। সে মা-বাবার চতুর্থ সন্তান। তার বাবা স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করেন। পুলিশ জানায়, পুকুরটি বিনোদদের বাড়ি থেকে ২০০-২৫০ মিটার দূরে।

An image of Death

মৎস্য দফতরের এই পরিত্যক্ত পুকুরে পড়েই মৃত্যু হয়েছে ওই শিশুর। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য এবং ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৮
Share: Save:

খেলতে খেলতে পরিত্যক্ত পুকুরে পড়ে মৃত্যু হল সাড়ে তিন বছরের এক শিশুর। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বিধাননগর কমিশনারেটের অধীন সুকান্তনগরের কয়লা গলি এলাকায়। ওই রাতে শিশুটির দেহ ভেসে ওঠে মৎস্য দফতরের একটি পরিত্যক্ত পুকুরে। সেটি সংস্কারের কাজ চলছিল। পুলিশ জানিয়েছে, বিনোদ বাগ নামে ওই শিশুটি দুপুরের দিকে পুকুরপাড়ে খেলতে খেলতে আচমকা জলে পড়ে যায়। সন্ধ্যার পরেও সে ফিরছে না দেখে পরিবারের লোকজন খোঁজ শুরু করেন। রাতে খবর দেওয়া হয় বিধাননগর দক্ষিণ থানায়। পুলিশ গিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুকুরে শিশুটির দেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয় মানুষ।

বিনোদের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। সে মা-বাবার চতুর্থ সন্তান। তার বাবা স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করেন। পুলিশ জানায়, পুকুরটি বিনোদদের বাড়ি থেকে ২০০-২৫০ মিটার দূরে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, দুপুরে কোনও এক সময়ে খেলতে খেলতে শিশুটি সকলের অলক্ষে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। তাকে দেখতে না পেয়ে সন্ধ্যার পরে শুরু হয় খোঁজ। শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটি ঢিবির উপরে উঠে বিনোদ খেলতে খেলতে পড়ে যায়। তার এক খেলার সঙ্গী গিয়ে বিনোদের বাড়িতে খবর দেয়। এর পরেই বিনোদের বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা পুকুরের দিকে ছুটে যান। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

বিনোদের বাবা বাবু বাগ জানাচ্ছেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী রূপা বৃহস্পতিবার দুপুরে কাজে গিয়েছিলেন। বাচ্চারা প্রতিবেশীদের ভরসাতেই ছিল। বাবু বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে আমরা ঘটনাটি জানতে পারি। একটি বাচ্চা খবর দেয়, আমার ছেলে জলে পড়ে গিয়েছে। আমি কিছু ভাবতে পারছি না।’’ রূপা কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। এ দিন ওই বাড়িতে কার্যত গোটা পাড়া ভেঙে পড়ে।

উল্লেখ্য, সরকারি কাজে অসতর্কতার কারণে এই বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় কার্যত একই ভাবে শিশু-মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল গত বছর। লেক টাউন থানা এলাকার এক জায়গায় একটি সরকারি সংস্থার কাজ চলছিল। শ্রমিকদের থাকার জায়গার পিছনে অরক্ষিত ডোবা ছিল। সেখানে কিছুটা দূরের এলাকা থেকে খেলতে এসে পড়ে গিয়ে মারা যায় একটি শিশু। সেই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। সুকান্তনগরের পরিস্থিতি তেমন না হলেও কেন মৎস্য দফতর ওই জায়গাটি ঘিরে রাখেনি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।

মৎস্য দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, পুকুরটি ঘেরার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। তবে পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে নানা কারণে মজে গিয়েছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে সেটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। মৎস্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুকুরটি নানা ভাবে জবরদখলও হয়েছিল। সেটি খুঁড়ে চওড়া করার কাজ চলছে। তবে পুকুরটি যেখানে রয়েছে, সেখানে সচরাচর কেউ যান না। কী ভাবে বাচ্চাটি সেখানে পৌঁছল, বোঝা যাচ্ছে না। পুকুরটি সংস্কার করে ওই জায়গাটি ঘিরে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE