আহত সুবীর বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
মোটরবাইক আরোহী একটি দলের এক সদস্যের পিছু নিয়ে প্রথমে পিছন থেকে ধাক্কা। তার পরে তাঁকে রাস্তায় ফেলে হেলমেট দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল মত্ত যুবকদের বিরুদ্ধে। মারের চোটে চোখের পাশের হাড় ভেঙে গিয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক। রবিবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় আলিপুর থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করলেও শহরের রাস্তায় নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
মারধরে জখম ওই যুবকের নাম সুবীর বিশ্বাস। বছর আটত্রিশের সুবীর বেহালা থানা এলাকার পূর্ব পুটিয়ারির বাসিন্দা। গত ১৭ ডিসেম্বর ১৫ জন বাইক আরোহীর একটি দলের সঙ্গে ওড়িশায় বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। পরদিন, অর্থাৎ রবিবার, ওড়িশা থেকে ফেরার পথে বিকেলে কোলাঘাটে সকলে একসঙ্গে মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে খাওয়াদাওয়া করেন। তার পরে যে যাঁর মতো বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। মোটরবাইকে একাই কলকাতায় ফিরছিলেন সুবীর। তাঁর দাবি, রাস্তায় হঠাৎই দুই যুবক বাইকে তাঁর পিছু নিতে শুরু করে। প্রথমে তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে তাঁর বাইকের পিছনে ধাক্কা মেরে এগিয়ে যায় একটি মোটরবাইক। এর পরে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে সিগন্যালে দাঁড়াতেই পিছন থেকে অন্য একটি বাইক সজোরে তাঁর বাইকের পিছনে ধাক্কা মারে। যার জেরে সুবীর রাস্তায় পড়ে যান। তিনি ঘটনার প্রতিবাদ করতেই ওই দুই যুবক তাঁর উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে রাস্তায় ফেলে কিল, ঘুষি মারার পাশাপাশি হেলমেট দিয়ে মাথায় ও চোখে আঘাত করা হয়। যার জেরে কিছু ক্ষণের জন্য তিনি অজ্ঞান হয়ে যান বলেও দাবি তাঁর পরিজনদের। সুবীরের অভিযোগ, অভিযুক্তেরা মত্ত অবস্থায় ছিল। কিন্তু হঠাৎ তারা তাঁর পিছু নিয়ে এই কাণ্ড কেন ঘটাল, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
এ দিকে, চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে পুলিশ চলে আসে। আহত সুবীরকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাতেই আলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সুবীর। বর্তমানে তিনি আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাইক আরোহী দলের আর এক সদস্য, সুবীরের বন্ধু জ্যোতি চৌধুরী বলেন, ‘‘হেলমেট দিয়ে এমন ভাবে চোখে মেরেছে যে, রক্ত বেরিয়ে গিয়েছিল। চোখটা কী অবস্থায় আছে, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। এ ছাড়াও, শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত লেগেছে।’’
পেশায় ব্যবসায়ী সুবীরের বাইক চালানোই নেশা। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী ও সন্তান। এর আগেও একাধিক বার বিভিন্ন দলের সঙ্গে দেশের নানা জায়গায় বাইক চালিয়ে ঘুরে এসেছেন তিনি। জ্যোতি বলেন, ‘‘অভিযুক্ত যুবকেরা স্থানীয় বলেই মনে হচ্ছে। পুলিশকে সবটা জানানো হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলেও কোথাও এমন সমস্যায় পড়তে হয়নি। বাড়ির কাছে এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত ওর পরিবার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy