প্রজ্ঞাদীপা হালদার। —ফাইল চিত্র।
এক মহিলা চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় আঙুল উঠেছে তাঁর সঙ্গী চিকিৎসকের দিকে। যদিও এই ঘটনার তদন্তে নেমে একটি সুইসাইড নোট ও অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আত্মহত্যার মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত চিকিৎসক ব্যারাকপুর সেনা হাসপাতালে উচ্চ পদে কর্মরত। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতা প্রজ্ঞাদীপা হালদার (৩৭) নামে ওই চিকিৎসক বারাসত-১ ছোট জাগুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘ মানসিক অবসাদ থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তদন্তে পুলিশের অনুমান। তাঁর দেহের কাছে পড়ে থাকা সুইসাইড নোটের ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে অবসাদ। সমাজমাধ্যমে সক্রিয় প্রজ্ঞাদীপা লেখালেখি করতেন। ফেসবুকে তাঁর সহস্রাধিক ফলোয়ার ছিলেন। তাঁর শেষ পোস্টটি ছিল, ‘কেউ নেই কিছু নেই সূর্য দুবে গেছ।’ সম্ভবত ‘ডুবে গেছে’ লিখতে চেয়েছিলেন।
তদন্তকারীদের দাবি, বারাসতের দক্ষিণপাড়া শীতলাতলা রোডের বাসিন্দা প্রজ্ঞাদীপার সঙ্গে ওই সেনা-চিকিৎসকের সম্পর্কের সূত্রপাত চার বছর আগে, ফেসবুকের মাধ্যমে। ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্টের সেনা ছাউনির ম্যান্ডেলা হাউস আবাসনে তাঁরা থাকতেন। সেখান থেকেই সোমবার রাতে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। সঙ্গী চিকিৎসককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ঘটনার আকস্মিকতায় ওই চিকিৎসক মানসিক ভাবে সুস্থ নেই। সুস্থ হলে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’ প্রজ্ঞাদীপার বাবা অসুস্থ। তাঁকে এখনও জানানো হয়নি মেয়ের মৃত্যুসংবাদ। তরুণীর মাসতুতো দাদা কুমারশঙ্কর দাস পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তের একাধিক সম্পর্কের কথা প্রজ্ঞাদীপা জেনে যাওয়ায় অশান্তির শুরু। নিয়মিত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতেন তিনি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানান আত্মীয়।
বুধবার রাতে প্রজ্ঞাদীপার মা ঝর্না হালদার বলেন, ‘‘সোমবার গভীর রাতে ব্যারাকপুর কমান্ড হাসপাতাল থেকে ফোন এল, মেয়ে অসুস্থ বলে। গিয়ে দেখি, ম্যান্ডেলা হাউসের সামনে মিলিটারি পুলিশ, কমিশনারেটের আধিকারিকেরা ছিলেন। ঢুকতে পারিনি। শুনলাম, গলায় ফাঁস দিয়ে বসা অবস্থায় দেহ মিলেছে মেয়ের। ওকে খুব মারত। এ বার মেরেই ফেলল। এর আগেও গলায় কালশিটে দেখেছি। মেয়েকে বিবেচক মনে হত। তাই কখনও অবিশ্বাস করিনি।’’
ব্যারাকপুর ব্রিগেডের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কমিশনারেটের আধিকারিকেরা। সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড জানিয়েছে, কোনও সেনা-চিকিৎসক তাঁর সঙ্গিনীর আত্মহত্যার প্ররোচনায় অভিযুক্ত, এমন তথ্য তাদের জানা নেই। তা প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নগরপাল অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হচ্ছে। আমরা সামগ্রিক বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy