E-Paper

ইএসআই হাসপাতালে ছ’তলা থেকে ‘ঝাঁপ’ দিয়ে মৃত্যু রোগীর

পুলিশ এবং ইএসআই হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রবোধচন্দ্রের বাড়ি সাঁকরাইলের রামচন্দ্রপুরে। তিনি মধ্য কলকাতার একটি অফিস ভবনে লিফ্‌টচালকের কাজ করতেন।

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ০৬:৩৯
Representative image of a dead person

হাসপাতালের শৌচাগারের জানলা খুলে নীচে ঝাঁপ দিয়েছিলেন রোগী। প্রতীকী চিত্র।

মানিকতলার ইএসআই হাসপাতালের ছ’তলা থেকে পড়ে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে শনিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ। প্রবোধচন্দ্র পয়রা নামে বছর সাতান্নর ওই রোগী বৃক্কের (কিডনি) সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, হাসপাতালের শৌচাগারের জানলা খুলে নীচে ঝাঁপ দিয়েছিলেন ওই রোগী। যদিও লালবাজার জানিয়েছে, মৃতদেহের ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব হবে। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে মানিকতলা থানার পুলিশ।

পুলিশ এবং ইএসআই হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রবোধচন্দ্রের বাড়ি সাঁকরাইলের রামচন্দ্রপুরে। তিনি মধ্য কলকাতার একটি অফিস ভবনে লিফ্‌টচালকের কাজ করতেন। স্ত্রী ছাড়াও তাঁর দুই ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছেন। স্ত্রী অঞ্জনা পয়রা এ দিন ফোনে জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই বৃক্কের সমস্যায় ভুগছিলেন প্রবোধচন্দ্র। গত শনিবার তাঁকে মানিকতলার ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার আগে থেকেই প্রবোধচন্দ্রের ডায়ালিসিস চলছিল। অঞ্জনা বলেন, ‘‘ও এতটাই ভেঙে পড়েছিল যে, শুধু বলত, বেঁচে থাকার কোনও ইচ্ছে নেই। এত শারীরিক সমস্যা সহ্য করতে পারছিল না। সাঁকরাইল থেকে সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালিসিস করাতে নিয়ে যেতাম। ফেরার সময়ে বহু বার এমন হয়েছে, হাওড়া স্টেশনের কাছে সাবওয়েতে শুইয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাওয়া করতে হয়েছে। তার পরে কোনও মতে নিয়ে বাড়ি ফিরেছি।’’

মহিলার দাবি, এ দিনও তাঁর স্বামীর ডায়ালিসিস হওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময়ে স্বামীকে তিনি জানিয়ে এসেছিলেন, মেয়ের ঘরের নাতনি মাধ্যমিক পাশ করেছে। নাতনির সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন বলে মোবাইল ফোনও রেখে এসেছিলেন স্বামীর কাছে। কিন্তু এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, সব শেষ। অঞ্জনার কথায়, ‘‘গিয়ে দেখি, আমার স্বামীর শয্যা ফাঁকা। নার্সরা বললেন, মর্গে খোঁজ করুন। উনি ঝাঁপ দিয়েছেন!’’

হাসপাতালের এক কর্মী বললেন, ‘‘ভোরের দিকে শৌচকর্মের জন্য উঠেছিলেন ওই রোগী। শৌচালয়ের জানলায় গ্রিল নেই। স্লাইডিং কাচ। সেই কাচ সরিয়েই ঝাঁপ দিয়েছেন উনি।’’ ঘটনাস্থল মানিকতলা থানার অন্তর্গত হওয়ায় সেখান থেকে পুলিশকর্মীরা যান। তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিশকর্মী এ দিন বলেন, ‘‘ওই রোগীর ভারী চেহারা ছিল। মুখ নীচের দিকে করা অবস্থায় মৃতদেহটি পড়ে ছিল। সে ভাবে বেশি রক্ত বেরোয়নি। তবে, অত উঁচু থেকে পড়ার ফলে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর মৃত্যু হয়।’’ এ দিন ময়না তদন্তের পরে ওই রোগীর মৃতদেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

প্রবোধচন্দ্র পয়রা।

প্রবোধচন্দ্র পয়রা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manicktala patient death

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy