দেড় বছর আগে অস্ত্রোপচার করতে সোঁদরবনের জঙ্গল থেকে শহরে এসেছিল সে। হাঁটুতে গজিয়ে ওঠা ফাইব্রয়ে়ড সফল ভাবে বাদও দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু তার পর থেকে জঙ্গলে ফেরা হয়নি তার। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আপাতত আলিপুর চিড়িয়াখানার বাঘেদের ঘরে ঠাঁই হয়েছে ওই পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গলের। কিন্তু লোকচক্ষুর সামনে আসতে পারছে না সে।
রাজ্য জু অথরিটি সূত্রের খবর, বাঘটিকে আলিপুর চিড়িয়াখানায় রাখা হবে না ঝড়খালির ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে, না কি রে়ডিও কলার পরিয়ে বাদাবনে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, সে সব এখনও ঠিক হয়নি। ওই হলুদ়-কালো ডোরাকাটার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ। সম্প্রতি তিনি বাঘটিকে দেখেও এসেছেন। কিন্তু এখনও সিদ্ধান্ত জানাননি।
২০১৫-র শেষে কুলতলি থেকে উদ্ধার করা হয় পূর্ণবয়স্ক ওই বাঘটিকে। লেজ ধরে তার দৈর্ঘ্য ফুট আটেক। উদ্ধারের পরে অসুস্থতা ধরা পড়ায় তার ঠাঁই হয় ঝড়খালির বন দফতরের শিবিরে। দেখা যায়, বাঘটির পায়ে সমস্যা। হাঁটতে রীতিমতো কষ্ট করতে হচ্ছে তাকে। প্রাথমিক ভাবে ঝড়খালিতেই চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ফল মেলেনি। আলিপুরের হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ পশু চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেন, বাঘটির ডান পায়ের পেশীর ‘টিস্যু’ ছিঁড়ে টিউমারের মতো দলা পাকিয়েছে, যাকে ফাইব্রয়েড বলা হয়। তা থেকেই পুঁজ জমছিল পায়ে।
চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা রুদ্রদেব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সুব্রত সাঁকি ও গোপাল সামন্ত নামে আরও দুই সরকারি পশু চিকিৎসককে নিয়ে তিন সদস্যের দল গড়া হয়েছিল। অস্ত্রোপচারে বাদ যায় সেই ফাইব্রয়েড। তার পর থেকে বাঘটি বেশ সুস্থ রয়েছে। ঘেরাটোপেই নিয়মিত মুরগি, মোষ চিবোচ্ছে সে। চিড়িয়াখানার এক কর্মী বলছেন, ‘‘হাজার হোক ও বনের বাঘ। খাবার দেওয়া বাদে সামনে যায় না কেউ।’’
অন্তরালে বসেই মুক্তির দিন গুনছেন দক্ষিণরায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy