লেখাপড়া না করে অনবরত মোবাইলে গেম খেলে চলায় এক সময়ে ছেলেকে ঘরের বাইরে বার করে দিয়েছিলেন বাবা। শাস্তি হিসেবে তাকে দু’ঘণ্টা বাড়ির উঠোনে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন। তার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার। থানা-পুলিশ করার ২৪ ঘণ্টা পরে অবশেষে সোমবার পাটুলি থেকে উদ্ধার করা হল নিখোঁজ পড়ুয়াকে। মুচিপাড়া থানা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা গিয়েছে, বৌবাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ওই পড়ুয়া উত্তর কলকাতার একটি স্কুলে পড়ে। সে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে। তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে ছাত্রটির বাবা কাজ থেকে ফিরে ছেলেকে মোবাইল নিয়ে বসে থাকতে দেখেন। তখন মোবাইল রেখে ছেলেকে পড়ায় মন দেওয়ার কথা বলে ফের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। দুপুর আড়াইটে নাগাদ ফের ছেলেকে মোবাইলে গেম খেলতে দেখে রেগে যান তিনি। মোবাইল কেড়ে নিয়ে শাস্তি দিতে ছেলেকে বাড়ির বাইরে বার করে দেন। ওই ছাত্রের বাবা বলেন, ‘‘আমি ওকে বাইরে কান ধরে দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছিলাম। কথামতো ও বাইরেও চলে গিয়েছিল। আমি ঘরে ঢুকে যাই। এর পরে স্নান সেরে ছেলেকে ডাকতে এসে দেখি, ও নেই।’’
এর পরে বাড়ির বাইরে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে প্রথমে আশপাশে তার বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজখবর শুরু করেন পরিবারের সদস্যেরা। সেখানেও খোঁজ না পেয়ে এর পরে শুরু হয় আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি। কিন্তু তাতেও তার হদিস না মেলায় সন্ধ্যায় মুচিপাড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন তাঁরা। পড়ুয়ার বাবা বলেন, ‘‘এর আগেও একাধিক দিন মোবাইল বেশি দেখা নিয়ে বকাবকি করেছি। কোনও দিনই এমন ঘটনা ঘটেনি।’’
সোমবার, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর পরেও পড়ুয়ার কোনও খোঁজ না মেলায় দুপুরে ফের মুচিপাড়া থানায় যান পরিবারের সদস্যেরা। পুলিশের তরফে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তার খোঁজ শুরু হয়। এর পরেই সন্ধ্যা নাগাদ পাটুলিতে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যেরা। জানা গিয়েছে, বাবা বকাবকি করায় অভিমান করে প্রথমে শিয়ালদহ স্টেশনে চলে গিয়েছিল সে। স্টেশন চত্বরে বসেই সারা রাত কাটিয়ে দেয়। এর পরে সকালে হেঁটে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছয় সে। সেখান থেকে বাস ধরে পাটুলিতে এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে পৌঁছয়।
পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, এ দিন বিকেলে পাটুলিতে বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে পৌঁছলে তাঁরা ফোন করে ওই পড়ুয়ার বাড়িতে খবর দেন। এর পরেই পুলিশ এবং পরিবারের সদস্যেরা সেখানে গিয়ে পড়ুয়াকে উদ্ধার করেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)