Advertisement
E-Paper

পাটুলিতে প্রৌঢ়ের অপমৃত্যু, অ্যাসিডে জখম বৃদ্ধা, অসুস্থ আরও এক

পাটুলিতে একটি বাড়ির তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। ওই বাড়ির নীচতলা থেকে উদ্ধার হন অ্যাসিডে জখম এক বৃদ্ধা। বাড়ির দোতলা থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আরও এক মহিলাকে। পুলিশের অনুমান, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ এবং সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই এই বিপত্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ১৭:৪০

পাটুলিতে একটি বাড়ির তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। ওই বাড়ির নীচতলা থেকে উদ্ধার হন অ্যাসিডে জখম এক বৃদ্ধা। বাড়ির দোতলা থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আরও এক মহিলাকে। পুলিশের অনুমান, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ এবং সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই এই বিপত্তি।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাম অসিত দে (৫৮)। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অ্যাসিডে জখম পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধা শ্রমণা চক্রবর্তী। অসিত দে-র স্ত্রী চিত্রা দে (৪৮) অসুস্থ অবস্থায় বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শ্রমণাদেবীর মেয়ে শ্রীপর্ণা চক্রবর্তী ওই বাড়িতেই থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘সকালে ঘুমের মধ্যেই শুনতে পাই মায়ের চিৎকার। মা বলছিলেন, ‘আমার চোখে কে অ্যাসিড ঢেলে দিয়েছে। জ্বলে-পুড়ে যাচ্ছে।’ এর পরে আমার কাজের লোক দেখতে পায় মেসো অসিত দে রাস্তায় পড়ে আছেন। উপরে উঠে দেখি, মাসীর ঘরে কিছু জিনিসপত্র পুড়ে গিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। মাসী চিত্রা দে সিঁড়ির সামনে পড়ে আছেন।’’

সাতসকালে ওই বাড়ির উপরের ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে বাসিন্দারাই দমকলে খবর দেন। একটি ইঞ্জিন আসে। দমকল কর্মীরা সব দেখে পুলিশকে জানান।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাড়িটির মালিক শ্রীপর্ণাদেবীর মা শ্রমণাদেবী। শ্রীপর্ণার প্রথম স্বামী কিংশুক সেনগুপ্তের মাসী এবং মেসো হচ্ছেন অসিত দে এবং চিত্রা দে। ছেলে অমিত দে-কে নিয়ে এই বাড়িতেই থাকতেন তাঁরা। অমিতবাবু রাতে শ্রমণাদেবীর দেখভালও করতেন। ২০১২ সালে কিংশুকবাবুর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় শ্রীপর্ণার। তার পর থেকে অসিতবাবুদের বাড়ি ছাড়তে বলা হলেও তাঁরা বাড়ি ছাড়ছিলেন না। শ্রীপর্ণাদেবী জানান, দিন দুয়েক আগে এই নিয়ে তাঁদের সঙ্গে তুমুল ঝগড়াও হয়। তাঁর অভিযোগ, তখনই অসিতবাবু এবং চিত্রাদেবীর ছেলে অমিত দে হুমকি দিয়েছিলেন, শ্রীপর্ণাদের এমন অবস্থা করে ছাড়বেন যে তাঁরা এই বাড়ি ভোগ করতে পারবেন না।

শ্রীপর্ণাদেবী বলেন, ‘‘কিংশুক তার প্রথম পক্ষের মেয়েকে নিয়ে চলে গিয়েছে ডিভোর্সের পরে। তার পরেও এই বাড়িতে থেকে বাড়ির দখল নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন অসিত এবং চিত্রা। তাঁরা অমিতের সঙ্গে আমার বিয়ে দেওয়ার জন্য মায়ের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছিলন ডিভোর্সের পরে। মা তা মানেননি। আমার প্রথমপক্ষের ছেলে আরমানকে দত্তকও নেন মাসী এবং মেসো। ওদের ছেলে অমিত একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করলেও আমরাও আর্থিক সাহায্য করতাম। কারণ মেসো কোনও কাজ করতেন না। আমার বর্তমান স্বামী শুভম চক্রবর্তী এবং দ্বিতীয় পক্ষের মেয়েকে নিয়ে এই বাড়িতেই থাকি। অমিতই এই ঘটনার মূল চক্রী।’’

শ্রীপর্ণাদেবীর পরিচারিকা মানা অধিকারী বলেন, ‘‘সকালে এই বাড়িতে ঢোকার সময় শুনি, নীচের ঘরে মাসীমা জ্বলে গেলে পুড়ে গেল বলে চিৎকার করছেন। আর মেসোমশাই বাইরে পড়ে আছেন। পুলিশ আসার আগে দাদাই এদের হাসপাতালে নিয়ে যান।’’

পাটুলির ওই বাড়িতে সিসিটিভি-ও রয়েছে। শ্রীপর্ণাদেবী জানান, দিন সাতেক আগে সিসিটিভির তারগুলো পুড়ে যায়। কিন্তু কী করে পুড়ে গেল সেই বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, বেশ কিছু দিন ধরে শ্রীপর্ণদেবী বাড়িটি বিক্রির জন্য চেষ্টা করছিলেন। সম্প্রতি এই নিয়ে তিনি এলাকার বাড়ি, জমি বিক্রির কয়েক জন দালালের সঙ্গেও কথা বলেন বলে তাঁরা জনান। কিন্তু শ্রীপর্ণাদেবী এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

acid attack family dispute
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy