দুর্ঘটনার পরে। বৃহস্পতিবার। — সুমন বল্লভ
বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে কলকাতা পুরসভার বৈঠকের পরে এক দিনও কাটল না, ফের শহরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল পাঁচতলা একটি বাড়ি। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ পোস্তা থানা এলাকার ৭৪ বড়তলা স্ট্রিটের বাড়িটি ভেঙে পড়ে। তবে এ দিনই দুপুরে ওই বাড়ির বাসিন্দাদের পুলিশ সরিয়ে দেওয়ায় কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, বৃহস্পতিবার ডিসি সেন্ট্রাল অখিলেশ চতুর্বেদীর তরফে তাঁকে জানানো হয় গত বুধবার ওই বাড়ি থেকেই কয়েকটি ইট এবং চাঙড় খসে পড়ছে। তার পরে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়েও দেয়। বাড়িটি ভেঙে ফেলার জন্য পুরসভার অনুমতিও চাওয়া হয় বলে জানান ওই পুলিশকর্তা। এর পরেই পুরসভার বিল্ডিং দফতরকে বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই ওই বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন মেয়র। কিন্তু পুরসভা সেই কাজ শুরু করতে পারার আগেই ভেঙে পড়ল বাড়িটি। পুলিশের তৎপরতাতেই কারওর প্রাণহানি হয়নি বলে মত স্থানীয়দের।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই বাড়িতে ২৫টিরও বেশি পরিবার থাকত। বুধবার থেকে বাড়ির ইট খসে পড়তে শুরু করে। স্থানীয় বিধায়ক স্মিতা বক্সী পুলিশকে তা জানান বৃহস্পতিবার সকালে। দুপুরে বাসিন্দাদের প্রায় সকলকে পোস্তার কালীকৃষ্ণ ঠাকুর রোডের বারিক ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে অল্প কয়েক জন থেকে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় ফের বাড়ির একটি দেওয়াল ভেঙে পড়ার পরে তাঁরাও দ্রুত বাড়ি ছেড়ে যান। তার পরে রাত ৮টা নাগাদ পুরো বাড়িটিই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।
পুরসভা সূত্রের খবর, পোস্তা এলাকায় এ রকম বহু বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে, যেগুলির গায়ে রীতিমতো বিপজ্জনকের তকমা সাঁটা রয়েছে। বিবেকানন্দ উড়লপুলের ভেঙে পড়া অংশের কাছের বিপজ্জনক বাড়িগুলিতে বহাল তবিয়েতে রয়ে গিয়েছেন বহু পরিবার। ঝুঁকি সত্ত্বেও ভাড়াটেরা বহু ক্ষেত্রেই বাড়ি ছাড়তে নারাজ। কিন্তু দিন কয়েক আগেই পাথুরিয়াঘাটায় বাড়িতে চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনার খবর যায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তাঁর নির্দেশেই বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে পদক্ষেপ করতে বুধবার পুরভবনে বিশিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মেয়র। সেই উদ্যোগ কাজে পরিণত হওয়ার আগেই ঘটে গেল এই ঘটনা।
এ ক্ষেত্রে অবশ্য পুরসভা সূত্রে বলা হচ্ছে, জীর্ণ বাড়িটির লাগোয়া একটি বাড়ি তৈরি হচ্ছিল। সেই ধাক্কায় এই বাড়িটি ভাঙতে শুরু করে। বুধবার পুরভবনের বৈঠকে শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলির সংস্কারের উপায় নিয়ে আলোচনার সময়ে উপস্থিত কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ব্যবস্থা নিতে যত সময় যাবে, বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙার ঘটনাও ততই বেড়ে চলবে। এ দিন কার্যত সেটাই হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy