Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata Airport

বিমানের জ্বালানি বাঁচাতে বাধা বেসরকারি বাসের টার্মিনাস!

যশোর রোড ধ‍রে বিরাটি থেকে মধ্যমগ্রামের দিকে গেলে মাঝে পড়বে এই গৌরীপুর। কলকাতা বিমানবন্দরের পাঁচিল লাগোয়া সেখানেই ৩০বি রুটের বাস টার্মিনাস।

দখল: বিমানবন্দর লাগোয়া এই জমিতেই রয়েছে টার্মিনাস। যা সরানো নিয়ে উঠছে বিতর্ক। ছবি: সুদীপ ঘোষ

দখল: বিমানবন্দর লাগোয়া এই জমিতেই রয়েছে টার্মিনাস। যা সরানো নিয়ে উঠছে বিতর্ক। ছবি: সুদীপ ঘোষ

সুনন্দ ঘোষ
যশোর রোড ধ‍রে বিরাটি থেকে মধ্যমগ্রামের দিকে গেলে মাঝে পড়বে এই গৌরীপুর। কলকাতা বিমানবন্দরের পাঁচিল ল শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৩১
Share: Save:

বিমানবন্দর চত্বরের পাঁচিল লাগোয়া জমিতে তৈরি হচ্ছে ট্যাক্সিওয়ে। সেই কাজ শেষ হলে কলকাতা থেকে বিমানের উড়ে যাওয়ার (টেক-অফ) সময় বাঁচবে। বাঁচবে জ্বালানিও। কিন্তু সে কাজে বাধা হচ্ছে বিমানবন্দর চত্বর সংলগ্ন একটি বেসরকারি বাস টার্মিনাস! মাপজোক করে দেখা গিয়েছে, ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময়ে বড় বিমানের ডানা ছাড়িয়ে যতটা জায়গার প্রয়োজন, পাঁচিলের একটি অংশের জন্য সেই জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ওই পাঁচিল সরাতে চান কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, যে জমিতে পাঁচিল তোলা হয়েছে, জবরদখল হওয়া বিমানবন্দরের সেই জমিতে রয়েছে বেসরকারি বাসের টার্মিনাস।

যশোর রোড ধ‍রে বিরাটি থেকে মধ্যমগ্রামের দিকে গেলে মাঝে পড়বে এই গৌরীপুর। কলকাতা বিমানবন্দর-এর পাঁচিল লাগোয়া সেখানেই ৩০বি রুটের বাস টার্মিনাস। বাসমালিকদের দাবি, বাম আমলে তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী তাঁদের ওখানে বসিয়েছিলেন। সেখানে পাকা নির্মাণও করা হয়েছে। তাঁরা বিকল্প জায়গা না পেলে ওখান থেকে সরবেন না বলেও জানিয়েছেন। ফলে বার বার অনুরোধ করেও খালি করা যাচ্ছে না জায়গাটি।

রাজ্য পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, এক সময়ে দু’টি বেসরকারি রুট ৪৫ এবং ৩০বি রুটের টার্মিনাস ছিল বিমানবন্দরের বৃহত্তর এলাকার ভিতরেই। ১৯৯৫ সাল নাগাদ বাম জমানায় বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ শুরু হলে সেই টার্মিনাস সরিয়ে গৌরীপুরে আনা হয়। সম্প্রতি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জমি ফেরত চাওয়ায় ৪৫ রুটের টার্মিনাস কৈখালির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু ৩০বি সেখানেই রয়ে গিয়েছে।

আরও খবর: গভীর রাতে পার্টি, সিগারেট জ্বালিয়ে ঘুম, বৌভাতের দিনেই মৃত্যু বরের

আরও খবর: কঙ্কাল-কাণ্ডে প্রশ্নের ভিড়, আবার হবে ফরেন্সিক পরীক্ষা

দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বাসমালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ঠিক হয়েছে, কাছেই মধ্যমগ্রামে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ওই টার্মিনাস। সেই সিদ্ধান্ত লিখিত ভাবে জানানো হয় বাসমালিকদের সিন্ডিকেটকে। যদিও সিন্ডিকেটের কর্তা চিরদীপ পালের দাবি, রাজ্য সরকার লিখিত ভাবে তাঁদের কিছু জানায়নি। তাঁর বক্তব্য, মধ্যমগ্রামের যে জায়গায় বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরিত করার কথা বলা হচ্ছে সেটি কার্যত গাড়ি চলাচলের রাস্তা। সেখানে বাস রাখতে শুরু করলে কিছু দিন পরেই পুলিশের উপদ্রব সামলাতে হবে বলে তাঁর অভিযোগ।

কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, প্রধান রানওয়ের বিরাটির দিক পর্যন্ত ফক্সটর্ট নামে একটি ট্যাক্সিওয়ে বাড়ানোর কাজ চলছে। সেটা তৈরি হয়ে গেলে কলকাতা থেকে টেক-অফ করার বিমান একেবারে প্রধান রানওয়ের উত্তর প্রান্তের মুখে গিয়ে অপেক্ষা করতে পারবে। রানওয়ে খালি হলেই সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ঢুকে উড়ে যেতে পারবে। এখন রানওয়ে খালি হওয়ার পরে বিমানের গড়িয়ে প্রধান রানওয়েতে যেতে অনেক সময় লাগে।

কৌশিকবাবু বলেন, “মাপজোক করে দেখা গিয়েছে, সেখান থেকে বিমান যাওয়ার সময়ে তার ডানার পাশে যতটা জায়গা থাকার প্রয়োজন, গৌরীপুরের ওই পাঁচিলের জন্য তা থাকছে না। বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যাবে, বিমানবন্দরের ভিতরে পাঁচিল দিয়ে ওইটুকু জমি নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন ট্যাক্সিওয়ে সম্প্রসারণের জন্য ওই জমি জরুরি। রাজ্যকে সেটা বলেছি।”

গৌরীপুর টার্মিনাসে অপেক্ষারত বাসচালক দিলীপ সিংহ বলেন, “৩০ বছর ধরে বাস চালাচ্ছি। বাস গুমটির সঙ্গে শৌচালয়, বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা না থাকলে খুব সমস্যা হয়। এখানে এ সব পাকা করা আছে। নতুন জায়গায় কী হবে জানি না। এই জায়গা যে ছাড়তে হবে সেটা বুঝতে পারছি। কারণ, বিমানবন্দরের অফিসারেরা কয়েক দিন আগেও মাপজোক করে গিয়েছেন।” বাসমালিক সংগঠনের আরও এক নেতা দীপঙ্কর মিত্রের বক্তব্য, “আমরা বলেছি, এখান থেকে সরতে হলে কাছাকাছি স্ট্যান্ড বানিয়ে দেওয়া হোক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Airport taxi way Airport Authority
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE