E-Paper

৫০ লক্ষ তোলা চেয়ে ‘মারধরে’ অভিযুক্ত পুরপ্রতিনিধি, গ্রেফতার দুই

সন্ধ্যায় ওই প্রোমোটার বাগুইআটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরেই রাতে মূল অভিযুক্তদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম শুভেন্দু মণ্ডল ও রমেন মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০৭
আক্রান্ত প্রোমোটার কিশোর হালদার।

আক্রান্ত প্রোমোটার কিশোর হালদার। —নিজস্ব চিত্র।

৫০ লক্ষ টাকা!

নিজের জমিতে নির্মাণকাজ করতে চাওয়ার পরে এই অঙ্কের তোলা দেওয়ার ফরমান জারি হয়েছিল। অভিযোগ, সেই ফরমান দিয়েছিলেন খোদ স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি। ওই জমিতে নির্মাণকাজ বন্ধ করতে তিনি পুলিশ পাঠান বলেও অভিযোগ। কিন্তু প্রোমোটার অত টাকা দিতে পারেননি। সেই ‘অপরাধে’ ওই পুরপ্রতিনিধির লোকেরা রিভলভারের বাট দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই প্রোমোটার। রবিবার, বিধাননগর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা।

এ দিন সন্ধ্যায় ওই প্রোমোটার বাগুইআটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরেই রাতে মূল অভিযুক্তদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম শুভেন্দু মণ্ডল ও রমেন মণ্ডল। অন্য দিকে, অভিযুক্ত পুরপ্রতিনিধির বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

বাগুইআটি থানার অদূরে ওই ঘটনাটি ঘটে। কিশোর হালদার নামে ওই প্রোমোটারের অভিযোগ, শনিবার স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি তাঁকে কাজ বন্ধ করতে বলে অফিসে ডেকে পাঠান। তার পরে এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাগুইআটি থানার অদূরে, রঘুনাথপুরের ওই নির্মাণস্থলে ৩০-৪০ জনের একটি দুষ্কৃতী দল এসে হাজির হয় বলে অভিযোগ। কিশোর বলেন, ‘‘আমার জমিতে লোকজন এসে গোলমাল শুরু করে। রিভলভারের বাট দিয়ে মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। ৫০ লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছেন পুরপ্রতিনিধি। অথচ এটি আমার নিজের জমি, নির্মাণের নকশাও অনুমোদিত। তা সত্ত্বেও টাকা চাইছেন। আমি ২৩ লক্ষ টাকা দিয়েছি। তবু আমাকে মারধর করা হল।’’ এ দিন ওই ঘটনার পরে রক্তাক্ত প্রোমোটারকে দেখে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। প্রোমোটার জানান, পুরপ্রতিনিধির সঙ্গে গোলমাল এড়াতে একাধিক বার তোলার টাকা দিয়েও পুলিশকে কিছু জানাননি। কিন্তু এ দিন তাঁর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে। যদিও এই ঘটনার পরে কিশোরের উপরে আরও বড় আক্রমণ আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁর স্ত্রী দেবশ্রী।

কিশোরের আরও অভিযোগ, তিন-চার মাস আগে এক বার বাগুইআটি থানার পুলিশকে ওই নির্মাণ বন্ধ করার জন্য পাঠিয়েছিলেন অভিযুক্ত পুরপ্রতিনিধি। কিশোর বলেন, ‘‘আদালতে মামলা করি এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে। পুলিশ দুঃখপ্রকাশ করে জানায়, তারা আর আসবে না। আমার থেকে কত টাকা পুরপ্রতিনিধি নিয়েছেন, তার সব হিসাব আছে। ওঁর টাকা চাওয়ার ভিডিয়ো, অডিয়োও আছে। পুলিশ ব্যবস্থা না-নিলে আদালতে যাব। আমিও তৃণমূল করি।’’

উল্লেখ্য, কালীপুজোর সময়ে ওই ওয়ার্ডের একাধিক প্রোমোটারের কাছে মোটা তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। প্রোমোটারদের একাংশ জানিয়েছিলেন, সেই টাকা না-দিলে নির্মাণ আটকে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এ দিন কিশোরও সেই অভিযোগ করে বলেন, ‘‘কালীপুজোর সময়েও এক লক্ষ টাকা দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে চাই। উনি দেখুন, এ রকম লোক ক্ষমতায় থাকলে আগামী দিনে কী হতে পারে।’’

এ বিষয়ে একাধিক বার অভিযুক্ত পুরপ্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি, মেসেজেরও উত্তর দেননি। বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আপনাদের থেকেই শুনছি। জানি না কী ঘটেছে। তবে দলের নির্দেশ আছে, কেউ অন্যায় করলে ও তা প্রমাণিত হলে দল তাঁকে রেয়াত করবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

arrest Councillor complain

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy