Advertisement
E-Paper

কর্মবিরতি চলায় সাফ হল না হাসপাতাল

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র একটি রিপোর্ট বলছে, ফি বছর সারা পৃথিবীতে প্রায় ১৪-২০ লক্ষ মানুষ হাসপাতাল থেকে ছড়ানো সংক্রমণের ফলে অসুস্থ হন।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০১:০৮
অস্বাস্থ্যকর: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে জমে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

অস্বাস্থ্যকর: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে জমে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের এক ধারে জমে রয়েছে মেডিক্যাল বর্জ্য। নানা জিনিসের সঙ্গে সেখানে পড়ে আছে ব্যবহৃত তুলো, সিরিঞ্জ এবং সুচ। কাক ও কুকুরের মুখে মুখে সেগুলি এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ছড়াচ্ছে। বর্জ্যের জায়গায় ভনভন করছে মাছি। যা থেকে শুধু হাসপাতাল চত্বরের পরিবেশই দূষিত হচ্ছে না, বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কাও।

উপরের ছবিটা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। গত সাত দিন টানা জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জন্য রোগী-ভোগান্তি যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে হাসপাতালের ভিতরে আবর্জনার স্তূপ। কর্মবিরতির কারণে গত এক সপ্তাহ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সব গেট বন্ধ ছিল। চিকিৎসকদের পাশাপাশি নার্সরাও কর্মবিরতিতে শামিল হয়েছিলেন। এই ডামাডোলের মধ্যে হাসপাতালে জঞ্জাল পরিষ্কারের দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুরসভার কর্মীদের কাজেও ঢিলেমি দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও সেই অভিযোগ পুরোপুরি মানতে চাননি পুর কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র একটি রিপোর্ট বলছে, ফি বছর সারা পৃথিবীতে প্রায় ১৪-২০ লক্ষ মানুষ হাসপাতাল থেকে ছড়ানো সংক্রমণের ফলে অসুস্থ হন। তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয় প্রায় ৮০ হাজার মানুষের। কয়েক বছর আগে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উদ্যোগে এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় সারা দেশ জুড়ে চালানো এক সমীক্ষার ফলাফলে উঠে এসেছিল, ভারতে যত সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয় তার প্রায় ৬৩ শতাংশই নিরাপদ নয়। যা থেকে পদে পদে এইচআইভি বা হেপাটাইটিস বি সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়।

বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের মেডিক্যাল বর্জ্য ফেলার পরিকাঠামো এখনও শহর কলকাতায় নেই বলে বারবার সরব হয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। অন্য আবর্জনার সঙ্গেই ধাপায় ফেলা হয় সেই মেডিক্যাল বর্জ্য। সেই ধাপাও এখন ভর্তি হয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুরসভার তরফে বিকল্প ভাগাড় তৈরির সিদ্ধান্ত হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। যার জন্য বাড়ছে সমস্যা। পরিবেশকর্মীরা আরও জানাচ্ছেন, মেডিক্যাল বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক ভাগাড়ে তার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। যা বাড়িয়ে তুলছে দূষণ।

পরিবেশ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘একা আমাদের পক্ষে গুটিকয়েক কর্মী নিয়ে মেডিক্যাল বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করা অসম্ভব। এর জন্য সার্বিক ভাবে উদ্যোগী হতে হবে।’’ এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মণিরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘‘ডাক্তারেরা কর্মবিরতি চালালেও হাসপাতালের জঞ্জাল নিয়মিত সাফ হয়েছে। কোথাও নোংরা পড়ে থাকলে আগামী কালের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জন্য বিভিন্ন গেট বন্ধ থাকলেও পুরসভার জঞ্জাল ফেলার গাড়ি ভিতরে ঢুকেছে। এই ক’দিন রোগী কম হওয়ার জন্য আবর্জনাও কম জমেছে। তবু কোথাও আবর্জনা পড়ে থাকলে আমরা শীঘ্রই তা পরিষ্কারের ব্যবস্থা করব।’’

Calcutta Medical College and Hopsital Garbage Health Doctor's Strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy