Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Fire Accident

রান্না করতে গিয়ে আগুন, তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু বৃদ্ধার

পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সবিতা দাস (৭২)। তিনি রান্নাঘরে কাঠকুটো জ্বালিয়ে রান্না করছিলেন। আচমকাই রান্নাঘরের উপরে গুটিয়ে থাকা বিদ্যুতের তারে আগুন লেগে যায়।

পুড়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার হাতে ধরে কাঠের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বৃদ্ধা।

পুড়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার হাতে ধরে কাঠের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বৃদ্ধা। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:০১
Share: Save:

আশ্রমে যাওয়ার জন্য প্রতিবেশীরা ডাকতে এসেছিলেন বৃদ্ধাকে। কিন্তু তাঁরা দেখেন, রান্নাঘর থেকে বেরোচ্ছে পোড়া গন্ধ। আর পুড়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার হাতে ধরে কাঠের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বৃদ্ধা। তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন আঁচ করে বাঁশ দিয়ে বৃদ্ধার শরীরে ধাক্কা দিতেই তাঁর দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় বেহালার সরশুনার সোনামুখী রোডের দাসপাড়া এলাকায়।

পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সবিতা দাস (৭২)। তিনি রান্নাঘরে কাঠকুটো জ্বালিয়ে রান্না করছিলেন। আচমকাই রান্নাঘরের উপরে গুটিয়ে থাকা বিদ্যুতের তারে আগুন লেগে যায়। বৃদ্ধা সেই আগুন নেভাতে গিয়ে কোনও ভাবে তারটি ছুঁয়ে ফেলেছিলেন। তাতেই তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার খবর পেয়ে সরশুনা থানারপুলিশ সবিতার বাড়িতে গিয়ে তাঁর অচৈতন্য দেহ উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে বৃদ্ধাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পুলিশ জানায়, বৃদ্ধা আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ডান হাত দিয়ে বিদ্যুতের তারটি ধরায় তড়িদাহত হন। ঘটনার খবর পেয়ে সিইএসসি-র কর্মীরা ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে সেখানকার সব বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

মর্মান্তিক এই ঘটনায় স্তম্ভিতবৃদ্ধার পরিবার। তাঁর দুই ছেলে মহাদেব ও চিত্তরঞ্জন। বড় ছেলে মহাদেব কাঠের কাজ করেন। চিত্তরঞ্জন পেশায় রং মিস্ত্রি। তাঁরা দু’জন পাশাপাশি দু’টি বাড়িতে থাকেন। চিত্তরঞ্জনের স্ত্রী রেখা জানান, ঘটনার সময়ে বাড়িতে কেউ ছিলেন না। তাঁরা প্রতিবেশীদের থেকে শুনেছেন, এ দিন সকালেও এক বারকাঠকুটো দাউ দাউ করে জ্বলে উঠেছিল। সেই আগুন বৃদ্ধা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। আশপাশের লোকজন এসে কোনও মতে জল ঢেলে আগুন নেভান। তার পরেও ফের ওই একই ভাবে রান্না করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে বলে দাবি বৃদ্ধার বড় ছেলে মহাদেবের।

মহাদেব জানান, এ দিন সকালে কাজে বেরোনোর আগে তিনিডাল ও আলুভাতে রান্না করেছিলেন নিজের ও মায়ের জন্য।সবিতা দুপুরে ভাইয়ের বাড়ির রান্নাঘরে মাছ রান্না করছিলেন। ওইবাড়ির ছাদ অ্যাসবেস্টসের। সেখানে পাকা ওয়্যারিং নেই। রান্নাঘরে আলোর জন্য একটি তারউপরের দিকে দেওয়ালের সঙ্গে ঝোলানো ছিল। সেই তারেই এ দিন আগুন লাগে।

মহাদেব বলেন, ‘‘আমার ফোন খারাপ। সকালে কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। বিকেলে বাড়ি ফিরে শুনলাম,মা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। আমি ভাবতেই পারছি না, মাআর নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Accident Dead Cooking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE