Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Woman beaten at Lake Gardens

নেশার ঠেকের প্রতিবাদ, মহিলাকে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধরের অভিযোগ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা লেক থানা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের ১৮ বছরের ছেলে দক্ষিণ কলকাতার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

প্রতিবাদ করায় মহিলাকে মারধর।

প্রতিবাদ করায় মহিলাকে মারধর। প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:১১
Share: Save:

নেশার ঠেকের প্রতিবাদ করায় এক মহিলাকে চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠল লেক গার্ডেন্স এলাকায়। মহিলার দাবি, বিষয়টি নিয়ে থানার দ্বারস্থ হলেও পুলিশ কিছুই করেনি। শেষে সরকারি ‘গ্রিভান্স সেল’-এর পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের কমিশনারের দফতরে ই-মেল করে অভিযোগ করেন তিনি। লালবাজার জানিয়েছে, সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে গাফিলতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা লেক থানা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের ১৮ বছরের ছেলে দক্ষিণ কলকাতার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ওই মহিলার দাবি, প্রায়ই ভোরে ফুল তুলতে যান তিনি। গত ২৪ নভেম্বরও সেই জন্য বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, পরের দিন সকালে তাঁদের ফ্ল্যাটের সামনে চড়াও হন কয়েক জন। সকলেই ফ্ল্যাটের উল্টো দিকের বস্তিতে থাকেন। তাঁদের মধ্যে বুবাই মণ্ডল নামে এক যুবক দাবি করেন, তাঁর ভ্যানরিকশা চুরি গিয়েছে। ওই মহিলাই সেটি লোক দিয়ে চুরি করিয়েছেন বলে দাবি করেন ওই যুবকেরা। ভ্যানরিকশাটি যেখানে বাতিস্তম্ভের সঙ্গে চেন দিয়ে বাঁধা ছিল, তার আশপাশের কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁর এই সন্দেহ বলে দাবি করেন বুবাই।

মহিলার দাবি, ‘‘এই অভিযোগ একেবারে মিথ্যা। যে জায়গার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আমি ফুল কুড়োতে গিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু চুরির ব্যাপার ভাবতেও পারি না। উল্টে এই ছেলের দল বাড়ি এসে আমায় মারধর করে গিয়েছেন। এমন ঘুষি মারা হয়েছে যে একটি দাঁত নড়ে গিয়েছে। হাতও মচকে দেওয়া হয়েছে।’’ সেই সময়ে বার বার ফোন করলেও লেক থানার কেউই তা তোলেননি বলেই দাবি মহিলার। স্থানীয় এক নেতার মাধ্যমে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতেহয় তাঁকে।

মহিলার দাবি, তিনি বলে দেওয়ার পরেও থানা শুধু একটি অভিযোগপত্র নিয়েই ছেড়ে দেয়। বার বার এফআইআর করার কথা বলা হলেও করা হয়নি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বুবাই এবং তাঁর দলবল এলাকায় নেশার কারবার চালান। বহু বার প্রতিবাদ করেছি। বাড়ির পিছনের দিকে ওঁদের গাঁজার ঠেকের কথাও পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছিলাম। তখন ওঁদের থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হলেও পুলিশ বলে দিয়েছিল কে অভিযোগ জানিয়েছে। তার পর থেকেই ওঁদের আমার উপরে রাগ। সেই রাগ থেকেই চুরির বদনাম দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে।’’

অভিযুক্ত বুবাইয়ের অবশ্য দাবি, ‘‘একটি সিসি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে, রাত ৩টে ৩৬ মিনিট নাগাদ আমার ভ্যানের সামনে বসে ওই মহিলা কিছু একটা করছেন। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই এক ব্যক্তি ভ্যানের তালা খুলে সেটি নিয়ে যান। আমাদের সন্দেহ হওয়ার কথা বলতে যেতেই মহিলা আমায় চড় মারেন। এর পরে পাড়ার লোকেরা তাঁকেও ধাক্কা দিয়েছেন।’’ কিন্তু পুলিশ কী করছে? মহিলাদের তরফে অভিযোগ এলেই যেখানে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার, সেখানে এফআইআর না নিয়ে শুধুমাত্র অভিযোগ লিখে দিতে বলার কারণ কী? লেক থানার এক অফিসার বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। এফআইআর করার মতো হলেই করা হবে। গাফিলতির কোনও ব্যাপার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman beaten Lake Gardens Crime Against Women
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE