Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কড়ি ফেললেই মাছের ভোগ

অবাক হওয়ার কিছু নেই। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির কিংবা চিল্কিগড়ের কনকদুর্গার মন্দিরে দুর্গাকে মাছের ভোগ দেওয়া হয়। তেমনটাই দাবি রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

মা দুর্গার ভোগে মাছের ব্যবহার!

অবাক হওয়ার কিছু নেই। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির কিংবা চিল্কিগড়ের কনকদুর্গার মন্দিরে দুর্গাকে মাছের ভোগ দেওয়া হয়। তেমনটাই দাবি রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের। তাই এ বার দুর্গাপুজোর বিভিন্ন মণ্ডপে নিজেদের স্টলে নিগমের তরফ থেকে বিক্রি করা হবে মা দুর্গার আমিষ ভোগ। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘দেবীর ভোগ’।

কী থাকবে তাতে? নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস জানান, মোহন পোলাও, বেগুন ভাজা, শোল পোড়া, মাগুর মাছের টক ও পায়েস। পুজোর ভোগের মতোই মালসা ও শালপাতায় মুড়ে সেই দেবীর প্রসাদ মৎস্য উন্নয়ন নিগমের স্টল থেকে বিক্রি করা হবে। পঞ্চমী থেকে দেবীর ভোগ বিক্রি শুরু হবে।

ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎবাবুর বাড়ি ঝাড়গ্রামে। দীর্ঘদিন তিনি বর্ধমানে মহকুমাশাসকের পদে বহাল ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখন মাগুর মাছের দাম প্রচুর।

কিন্তু এক সময় মাগুর খাল-বিলে পাওয়া যেত। গরিব গ্রামের মানুষ দুর্গাকে বাড়ির মেয়ে বলে মনে করতেন। তাই সেই মাগুর মাছ দিয়েই তাঁরা দুর্গার ভোগ দিতেন। তাই থেকেই কনকদুর্গার মন্দিরে মাগুরের টকের চল।’’ আর ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় আদিবাসী অধ্যুষিত চিল্কিগড়ের কনকদুর্গার মন্দিরে শোল পোড়ার ব্যবহারের কথা জানেন সৌম্যজিৎবাবু।

তিনি জানান, এ বারে ওই প্যাকেজটি তৈরি করেও নিগমও থিম পুজোর সঙ্গে নিজেদের জুড়ে নিয়েছে। নিগম চাইছে, এ বার মা দুর্গার আমিষ ভোগ চেখে দেখুন দর্শকেরা। আধিকারিকেরা জানান, দুর্গা পুজোর ভোগ নিরামিষ হবে এটাই রীতি। কিন্তু নিগমের কারবার মাছ নিয়ে। অষ্টমীতে সিংহভাগ মানুষই নিরামিষ খান। ওই দিনটিতেই ভোগ-প্রসাদ বিতরণের রীতি। ফলে অষ্টমীতে অনেকেই মাছ খান না। স্টলগুলিতেও চিতল, ভেটকি, কইয়ের মত সুস্বাদু মাছ পড়েই থাকে।

ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিতের কথায়, ‘‘ওই দু’টি মন্দিরের ইতিহাস বলছে মা দুর্গা আমিষ খান। হতে তো পারে, এমন তথ্য সামনে আসার পরে অষ্টমীর দিনেও কেউ মাগুরের টক কিংবা শোল পোড়ার খোঁজে নিগমের স্টলে উঁকি দেবেন।’’

উৎসবের দিনগুলিতে তাই ‘দেবীর ভোগ’-এর বিক্রি ভাল হবে বলে আশা করছে নিগম।

শোল ও মাগুরের ওই পদটি ছাড়া অন্যান্য সুস্বাদু মাছের পদ নিয়ে প্রতি বছরের মতোই বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে হাজির হবে মৎস্য উন্নয়ন নিগম। আধিকারিকেরা জানান, পুজোকে সামনে রেখেই সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ থেকে প্রায় সাত লক্ষ বোরোলি মাছের চারা এনে নলবনে নিগমের জলাশয়ে ছাড়া হয়েছিল। সেই বোরোলি মাছের পদও পুজোর ক’টা দিন দর্শকদের সামনে হাজির করবে নিগম।

সোমবার মহালয়ার দিন থেকেই নিগমের রেস্তরাঁয় (নলবন, নবান্ন, ইকো পার্কে) ৩৯৯ টাকায় ছ’টি মাছের বুফে চালু হয়েছে। পঞ্চমীর দিন থেকে ঘরে বসেই অনলাইনে নিগমের হরেক রকমের পদের খাবারের পদ হাতে পাবেন শহরবাসীরা। নিগমের অ্যাপে (স্মার্ট ফিশ) ডাউনলোড করলে তিন রকম মাছের থালি সহজেই মিলবে। বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা থাকছে প্রবাসী, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে। নিগম সূত্রের খবর, যে কোনও পদ কিনলে তিনটি ক্ষেত্রেই দশ শতাংশ ছা়ড়ের ব্যবস্থা থাকছে।

নিগম জানাচ্ছে, পঞ্চমীর দিন থেকে শহরের ২৩টি বড় পুজো মণ্ডপ চত্বরে নিগমের স্টল থাকছে।

ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎবাবু বলেন, ‘‘সামুদ্রিক মাছ পমপ্যানো, গ্রুপারের চাষ হচ্ছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়। পমফ্রেটের বিকল্প পমপ্যানোর স্বাদ নিতে পারবেন মণ্ডপে আসা দর্শনার্থীরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Fisheries Department Prasad Fish
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE