গত জুন মাসে ঘটনাটি ঘটেছিল শ্যামপুকুর থানা এলাকার বিধান সরণিতে। প্রতীকী চিত্র
রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। হঠাৎ তাঁর সামনে এসে দাঁড়াল দুই যুবক। নিজেদের পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে মহিলাকে তারা বলল, নিরাপত্তার খাতিরে তিনি যেন সোনার সব গয়না শরীর থেকে খুলে ফেলেন। অভিযোগ, এ ভাবেই তাঁকে সাহায্য করার অছিলায় মহিলার চারটি সোনার বালা হাতিয়ে নেয় পুলিশরূপী সেই দুষ্কৃতীরা। পরে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা।
গত জুন মাসে ঘটনাটি ঘটেছিল শ্যামপুকুর থানা এলাকার বিধান সরণিতে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে চলতি সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ওয়াচ শাখা। ধৃতদের নাম ইউনুস ও আমজাদ। দু’জনেরই বাড়ি কল্যাণ থানা এলাকার পাটিলনগরে। গ্রেফতার করার পরে কলকাতায় নিয়ে এসে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ধৃতদের জেরা করার পরে পুলিশ বুধবার খড়্গপুর থেকে চুরি যাওয়া দু’টি সোনার গয়না উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানায়, ধৃত দুষ্কৃতীরা ‘ইরানি চক্র’-এর সদস্য। নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে সুরক্ষার কথা বলে হাতসাফাই করত তারা। শ্যামপুকুরের ঘটনাতেও একই ভাবে কাজ হাসিল করেছিল ওই অভিযুক্তেরা। নিজেদের পুলিশ বলে দাবি করে মহিলাকে প্রথমে চুরি-ছিনতাইয়ের ভয় দেখায় তারা। তার পরে রাস্তার একটি নির্জন দিকে নিয়ে যায় তাঁকে। সেখানে মহিলাকে হাতের সোনার বালা খুলে রাখতে বলে ওই দু’জন। মহিলা বালা খুলতেই তা নিয়ে নেয় ওই দুষ্কৃতীরা। বদলে অন্য কিছু কাগজে মুড়ে মহিলাকে দিয়ে দেয়। কাগজ খুলে মহিলা পরে দেখেন, তাঁর সোনার বালা নেই। তদন্তকারীদের দাবি, ওই চক্রটি এ শহরে আরও কয়েকটি ‘অপারেশন’ করেছে একই কায়দায়। শ্যামপুকুরের পাশাপাশি বন্দর এলাকাতেও হাতসাফাইয়ের এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে। তবে সেই সব ঘটনাতেও এরাই জড়িত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রায় আট মাস পরে কী ভাবে অভিযুক্তদের সন্ধান পেলেন তদন্তকারীরা?
লালবাজার সূত্রের খবর, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে সিসি ক্যামেরা নেই। ফলে তদন্তে প্রথম থেকেই বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, বছর কয়েক আগে কলকাতায় একই কায়দায় বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই সে সময়ে গ্রেফতার হওয়া দুষ্কৃতীদের ছবি দেখানো হয় অভিযোগকারী মহিলাকে। ছবি দেখে ওই মহিলা ইউনুসকে শনাক্ত করেন। সোর্স মারফত লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই ‘ইরানি চক্র’-এর সদস্যেরা মহারাষ্ট্রের কল্যাণে রয়েছে। এর পরেই সেখানে হানা দিয়ে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy