Advertisement
E-Paper

পুজো হবে স্কুল-কলেজে, খুশির হাওয়া কুমোরটুলিতে

সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলে যাবে আগামী ১২ তারিখ।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:১০
কুমোরটুলিতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

কুমোরটুলিতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

স্কুল-কলেজে সরস্বতী পুজো করার অনুমতি মেলায় উচ্ছ্বসিত কুমোরটুলির প্রতিমাশিল্পীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় এখনও পর্যন্ত সরস্বতী প্রতিমার খুব বেশি বরাত তাঁরা পাননি। কিন্তু এ বার রাজ্য সরকার স্কুলে ও কলেজে সরস্বতী পুজো করার অনুমতি দেওয়ায় বেশ কিছু বরাত আসবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলে যাবে আগামী ১২ তারিখ। কোভিড-বিধি মেনে স্কুলগুলি আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোও করতে পারবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য এখনই খুলছে না। তবে কোভিড-বিধি মেনে তারাও সরস্বতী পুজো করতে পারবে। শিক্ষামন্ত্রীর এই নির্দেশের পরে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে সরস্বতী পুজো করার তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কুমোরটুলির শিল্পীদের মুখেও হাসি ফুটেছে।

কুমোরটুলির প্রতিমা শিল্পী বাবু পাল জানালেন, শহরের বেশ কিছু স্কুল ও কলেজ তাঁর কাছ থেকেই প্রতি বছর প্রতিমা কিনে নিয়ে যায়। কোভিডের কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সেখানে সরস্বতী পুজো হবে না বলেই সকলে ভেবেছিলেন। তাই প্রতিমার বরাত তেমন আসেনি। বাবু বলেন, “এ বার স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সরস্বতী প্রতিমা অনেক কম বানিয়েছিলাম। প্রতি বছর যেখানে ২০০টির মতো প্রতিমা তৈরি করি, এ বার সেখানে একশোর কিছু বেশি প্রতিমা বানিয়েছিলাম। সেগুলিও সব বিক্রি হবে কি না, সেই আশঙ্কায় ছিলাম। এ বার স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় সেই আশঙ্কা ঘুচল। এখন মনে হচ্ছে, আরও কিছু বেশি প্রতিমা তৈরি করলে ভাল হত।”

কুমোরটুলির শিল্পীরা জানাচ্ছেন, শুধু তো স্কুল-কলেজ নয়, শহরের বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, গানের স্কুল ও নাচের স্কুলেও সরস্বতী পুজো হয়। স্কুলে পুজো হবে না বলে ওই সমস্ত জায়গাতেও পুজো হবে না বলেই সকলে ধরে নিয়েছিলেন। এ বার স্কুলে পুজোর অনুমতি মেলায় বেশ কিছু কোচিং সেন্টারও পুজো করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারাও এখন প্রতিমা কিনতে ভিড় জমাচ্ছে কুমোরটুলিতে।

আর এক শিল্পী তথা ‘কুমোরটুলি প্রগতিশীল মৃৎশিল্পী ও সাজশিল্পী সমিতি’র সম্পাদক অপূর্ব পাল জানালেন, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু স্কুল ও কলেজ প্রতিমার বায়না দিয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “বাড়ির জন্য যে প্রতিমা কেনা হয়, তার চেয়ে স্কুল-কলেজের সরস্বতী প্রতিমার উচ্চতা বেশি হয়। তার সাজসজ্জাও অনেক বেশি। এই ধরনের প্রতিমা বিক্রি করলে আমাদের লাভও বেশি থাকে। এ বার স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় কম সংখ্যক প্রতিমা গড়েছিলাম। বড় প্রতিমা তেমন বানাইনি। এত দিনে মনে হচ্ছে সুদিন একটু ফিরতে পারে। তবে সময় কম, তাই বড় প্রতিমা খুব বেশি বানাতে পারব না।” মিন্টু পাল নামে আর এক শিল্পী জানালেন, পুজোর অনুমতি আরও কয়েক দিন আগে দেওয়া হলে তাঁদের পক্ষে ভাল হত। তা হলে আরও কিছু বরাত পেতেন তাঁরা।

তবে শেষ মুহূর্তে হলেও সরকার স্কুল-কলেজে সরস্বতী পুজোর অনুমতি দেওয়ায় কুমোরটুলি অনেকটাই স্বস্তিতে। এক শিল্পী জানালেন, প্রতি বছরই সরস্বতী পুজোর আগে তাঁদের ব্যস্ততা তুঙ্গে থাকে। কিন্তু এ বার কাজের চাপ তেমন ছিল না। তবে শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পরে হঠাৎ করেই ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছে কুমোরটুলির। শিল্পীরা জানাচ্ছেন, বছরের শুরুতেই প্রতিমার ব্যবসায় একটা আশার আলো তাঁরা দেখতে পেলেন।

মিন্টুবাবু বললেন, ‘‘আগের গোটা বছরটাই প্রবল দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে কেটেছে। কথায় আছে, সকাল দেখে বোঝা যায় সারাটা দিন কেমন কাটবে। বছরের শুরুটা যখন ভাল হল, তখন কোভিড-আতঙ্ক কাটিয়ে সারা বছরই এ বার ভাল কাটবে আমাদের, এটাই আশা।”

saraswati puja kumortuli
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy