—নিজস্ব চিত্র।
চলন্ত অটোয় এক স্কুলছাত্রীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে চালককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম অরুণকুমার দাস। বাড়ি মুচিবাজার থানার তারক প্রামাণিক রোডে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২২ এপ্রিল দুপুরে স্কুল ছুটির পরে বিধান সরণি থেকে অটোয় উঠেছিল ছাত্রীটি। ফুলবাগান থানা এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, অটোটি এসে দাঁড়ালে সে চালককে জিজ্ঞাসা করে, তিনি ফুলবাগান যাবেন কি না। চালক রাজি হয় এবং তাকে পিছনে বসতে বলে। কিছু দূর এগোনোর পরে চালতাবাগানের কাছে অটো থামিয়ে অরুণ ওই কিশোরীকে বলে সামনে বাঁ দিকে বসতে। মেয়েটির অভিযোগ, বড় রাস্তা দিয়ে না গিয়ে চালক রমানাথ চ্যাটার্জি স্ট্রিট-সহ একাধিক গলি দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে যায়। তখন ওই কিশোরী ছাড়া অটোয় আর যাত্রী ছিলেন না।
পুলিশকে ছাত্রীটি জানিয়েছে, সুনসান গলি দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় সে ভয় পেয়ে যায়। অভিযোগ, গলি দিয়ে যাওয়ার সময়ে চালক অরুণ মেয়েটির শরীরের নানা জায়গায় হাত দেয়। প্রতিবাদ করে ওই কিশোরী। এর পরে অটোটি এপিসি রোড পেট্রল পাম্প থেকে মানিকতলা মেন রোডে বাঁক নেওয়ার সময়ে গতি কমাতেই সে লাফিয়ে নেমে পড়ে। পরে অন্য অটো ধরে বাড়ি যায়। ওই কিশোরীর থেকে শুনে প্রথমে ফুলবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাড়ির লোক। কিন্তু ঘটনাস্থল আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকায় হওয়ায় ২২ তারিখেই সেখানে অভিযোগ করেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কিশোরী অটোর নম্বর বলতে না পারায় প্রাথমিক ভাবে অসুবিধায় পড়েন তদন্তকারীরা। তবে সে অটোর বর্ণনা দিতে পেরেছিল। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রী চারটি বিষয় বলেছিল, যা থেকে অটোটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সেগুলি হল, অটোর পিছনে বেতালের ছবি ছিল, অটোর পিছনের আসন ডান দিকে খানিকটা ছেঁড়া ছিল, হেডলাইট ভাঙা এবং অটোর পিছনে সাঁটা ছিল চৈত্র সেলের পোস্টার।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই চারটি তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ অটোটির খোঁজ পায়। তারা জানিয়েছে, সেটি কোনও রুটের অটো নয়। বরং ‘রিজার্ভ’ খাটে। রুটের অটো ছাড়া শহরের বুকে এ ভাবে ‘রিজার্ভ’ চালানো বেআইনি বলে জানাচ্ছে পুলিশ। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার তদন্তকারীরা এক সোর্সের মাধ্যমে শনিবার ১৫০ টাকার বিনিময়ে ওই অটোটি রিজার্ভ করেন। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কাছাকাছি আসতে গাড়িটি আটক করা হয়। গ্রেফতার করা হয় অরুণকে।
এ দিকে, চলন্ত অটোয় দিনেদুপুরে এক ছাত্রীকে হেনস্থার ঘটনায় অটোর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অটোচালকদের একাংশের বিরুদ্ধে হুমকি, মারধর, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ নতুন নয়। এমন বারবার ঘটলেও কেন চালকেরা শুধরোচ্ছেন না? এ প্রসঙ্গে উত্তর কলকাতা আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি মানা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এমন ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করব না। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অভিযুক্ত চালক আমাদের সংগঠনের সদস্য নন। বেআইনি ভাবে এ হেন রিজার্ভ অটো চালানোর আমরা পক্ষপাতী নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy