যেখানকার মেনুতে যত ঘরোয়া পদ বেশি, সেই রেস্তোরাঁর এখন ততই কদর। উৎসব-পার্বণে যে মণ্ডা-মিঠাইকে বলে বলে গোল দিচ্ছে পটল-বেগুন, শাক-চচ্চড়ি!
শহুরে রেস্তোরাঁয় বৈশাখী মেনু তাই এ বছর সেজেছে সে ভাবেই। মাংস-চিংড়ি থাকলেও যেমন নিরামিষ ঘরোয়া রেসিপিতে জোর দিয়েছে বাঙালি রসনার ঠিকানা ওহ্! ক্যালকাটা। গুরুত্ব পাচ্ছে এঁচোড়ের কালিয়া, পটলের দোলমা, ছোলার ডাল। পাঁচতারাতেও একই মেজাজ। তাজ বেঙ্গলে বছর বরণ হচ্ছে সুক্তো, পালং শাকের চচ্চড়ি, কড়াইশুঁটি দিয়ে মুগ ডালে।
হোটেল হিন্দুস্তান ইন্টারন্যাশনাল দই কাতলা, ফুলকো লুচি, নারকেল দিয়ে ছোলার ডালের ব্যবস্থা রেখেছে উৎসব ভোজ জমিয়ে তুলতে। হোটেল গেটওয়েও মেনুতে ধরে রেখেছে বাঙালি গেরোস্তালির আন্তরিকতা। ডাঁটা-বড়ি পোস্তো, মোচার ঘণ্ট, পাকা কাতলার কালিয়া, আম দিয়ে পাবদা— এমনই সব পদ রান্না হচ্ছে সেখানকার হেঁসেলেও।
সেক্টর ফাইভের জয়সলমের-এ আপ্যায়ন শুরু ঘরোয়া মেজাজের গন্ধরাজ লেবুর সরবতে। সঙ্গে থাকছে ওপার বাংলার ধাঁচে কদলি পুষ্প ঘণ্ট, ভাপা ছানার মতো নানা পদ।
পূর্ণদাস রোডের সপ্তপদীতে আবার পুরনো বাঙালি খাবারে আনছে নতুনত্বের ছোঁয়া। পোস্ত, মুরগি, ভাজাভুজির শেষপাতে সেখানে থাকছে মিহিদানার পায়েস। রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজেও এ দিনের আহারে থাকছে ঘরোয়া ছোঁয়া। চিংড়ি-মাংসের পাশাপাশি থাকছে ধনেপাতা দিয়ে টোম্যাটো পোড়া, মাংসের চপ, লোটে মাছের বড়া।
দক্ষিণ কলকাতার পার্ক প্যাভিলিয়ন এ বার জোর দিয়েছে রকমারি ভাজায়। ভোজ জমতে পারে ধনেপাতার বড়া, মোচা-চিংড়ির চপে। বিমানবন্দরের কাছে হোটেল হলিডে ইন আবার তুলে ধরছে নানা কিসিমের পোস্তো-চচ্চড়ি। চেখে দেখা যায় পোস্তো বড়া, পোস্তো কাঁচা লঙ্কা বাটা, ডিম পোস্তোও। আমাদা পোস্তো, লাল পাবদা, মাছের পুর দিয়ে কুমড়োফুল ভাজা চেখে দেখতে আবার ঘুরে আসা যায় চার্নক্স থেকে।
বাঙালির বিলিতি প্রীতি আর নতুন কী? সাবেক মনে বিলিতি ছোঁয়া দিতে বছর শুরু দিনটিতেও জমানো যায় রিসোতো, গ্রিলড ফিশ, পর্ক চপ, ক্যারামেল কাস্টার্ডের ভোজ।
বৈশাখী আড্ডা বসতে পারে চ্যাপটার টু-র টেবিলে। সিজলিং ব্রাউনি, চিলি ক্র্যাব, বাটার গারলিক ফিশে বছর বরণ করতে চাইলে ঘুরে আসা যায় চাউম্যান থেকে।
বিলিতি ডেজার্টে বাঙালি টুইস্ট দিতে নববর্ষে মামা মিয়া এবং রলিক এনেছে নানা নতুন ফ্লেভার। ম্যাঙ্গো জেলাতে কেক, আলফোন্সো ম্যাঙ্গে ম্যাজিক ম্যাঙ্গো সানডে চেখে দেখাই যায় এ মরসুমে।
তবে বাঙালির পাতে সবের উপরে এখনও বিরিয়ানি বড় সত্য। মুঘলাই মেজাজে বৈশাখ বরণেও তাই পাপ দেখেন না কেউ। ঔউধ ১৫৯০ সেই রসিকদের কথা মাথায় রেখে অঢেল কোরমা, বিরিয়ানি, চাপ মজুত রাখছে দিনভর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy