Advertisement
E-Paper

বাংলা মাধ্যম বন্ধ হচ্ছে পাঠভবনে, ক্ষুব্ধ বহু প্রাক্তনী

পাঠভবন স্কুলে বাংলা মাধ্যম তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের প্রাক্তনীদের একাংশ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পাশাপাশি চলছিল বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম। কিন্তু পাঠভবন স্কুলে বাংলা মাধ্যম তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের প্রাক্তনীদের একাংশ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।

গত শিক্ষাবর্ষেই ওই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা মাধ্যম তুলে দেওয়া হয়েছে। এ বারেও যারা পঞ্চম শ্রেণিতে উঠল, তারা শুধুই ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার সুযোগ পাবে। পাঠভবনে এখন প্রাক্‌-প্রাথমিক এবং প্রাথমিক স্তরে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা হয়। পঞ্চম থেকে মাধ্যম ভাগ হয়ে যায়। কিন্তু গত বছর থেকে পঞ্চম শ্রেণি এবং তার পরে শুধুই ইংরেজি মাধ্যম চালু রাখা হয়েছে।

পাঠভবনের অধ্যক্ষা শুভা গুপ্ত বৃহস্পতিবার জানান, অভিভাবকেরাই তাঁদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়াতে চাইছেন। ফলে বাংলা মাধ্যমে পড়ুয়ার সংখ্যা খুব কমে যাচ্ছে। আগে প্রতি ক্লাসে তিনটি বাংলা ‘সেকশন’ বা বিভাগ ছিল আর ইংরেজি সেকশন ছিল দু’টি। ‘‘কমতে কমতে বাংলা সেকশন একটিতে ঠেকেছে। তাতেও পড়ুয়া সাকুল্যে জনা পনেরো। তাই গত বছর বাংলা মাধ্যম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু বিষয়টি সাধারণ মানুষকে প্রায় জানানোই হয়নি বলে অভিযোগ প্রাক্তনীদের। ইংরেজি মাধ্যমের সঙ্গে বাংলা মাধ্যমের পড়াশোনা সমান মানের ছিল বলে তাঁদের দাবি। তাঁদের বক্তব্য, পাঠভবন শুরু হয়েছিল প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিকল্প শিক্ষার এক নতুন আদর্শকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার জন্য। বাংলা মাধ্যমকে ইংরেজি মাধ্যমের সমান গুরুত্বে পরিচালনা করাটা তারই অঙ্গ। ১৯৭৫ সালে এই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন মনসিজ সেনগুপ্ত। তিনি জানান, উমা সেহানবীশের নেতৃত্বে সাউথ পয়েন্ট থেকে বেশ কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বেরিয়ে এসে পাঠভবন স্কুল তৈরি করেছিলেন। যাঁদের মধ্যে ছিলেন মনসিজবাবুর মা ভামতী সেনগুপ্ত। পরে যিনি স্কুলের অধ্যক্ষা হন। স্কুল তৈরির সময় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, স্কুলে বাংলা ও ইংরেজি দু’টি মাধ্যমই থাকবে। মনসিজবাবু বলেন, ‘‘সেই নিয়ম কী করে ভেঙে ফেলা হল? পড়ুয়া কম হলেও বাংলা মাধ্যম থাকুক।’’ ১৯৮০ সালে পাঠভবন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা অমিতাভ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ইংরেজি মাধ্যমে পড়বেন বলেই তিনি পঞ্চম শ্রেণির ভর্তি-পরীক্ষা দিয়েছিলেন। উমাদেবী তাঁর অভিভাবকদের জানান, তাঁকে বাংলা মাধ্যমে ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে। প্রথমে দুঃখ পেলেও পরে তিনি বুঝেছিলেন, এই স্কুলে বাংলা মাধ্যমের পড়াশোনা ইংরেজি মাধ্যমের থেকে কম নয়। বরং ফল বেরোলে দেখা যেত, বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের কয়েক জন শীর্ষে আছে।

শুধু প্রাক্তনীরাই যে ক্ষুব্ধ, তা নয়। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন

অনেক অভিভাবকও। কালিন্দীতে থাকেন অরুণ সেন। নাতি আরণ্যক যাতে ভবিষ্যতে পাঠভবনে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করতে পারে, সেই জন্য তাকে এই স্কুলের মন্তেসরি বিভাগে ভর্তি করিয়েছিলেন তিনি। অরুণবাবু বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘পাঠভবনে যে বাংলা মাধ্যম রাখাই হবে না, এ তো সম্প্রতি জানলাম। অথচ এই স্কুলে পঠনপাঠনের মান ভাল এবং বাংলা মাধ্যম রয়েছে বলেই এত দূর থেকে ওকে ওখানে

ভর্তি করিয়েছিলাম।’’

Patha Bhavan Bengali Medium
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy