Advertisement
E-Paper

মাগুর, ফলুই ফেরাতে জৈব চাষ

নিউ টাউনের ইকো পার্কের জলাশয়ে এমনটা হওয়ার কথা ছিল। তার বদলে শিকে ছিঁড়ছে উল্টোডাঙার বিধান শিশু উদ্যানে। নারকেল গাছে ঘেরা ২২ বিঘার পুকুরে গড়ে উঠছে রকমারি দেশি মাছের আঁতুড়ঘর।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০১:৪২
এই পুকুরেই হবে জৈব চাষ। ছবি: শৌভিক দে

এই পুকুরেই হবে জৈব চাষ। ছবি: শৌভিক দে

নিউ টাউনের ইকো পার্কের জলাশয়ে এমনটা হওয়ার কথা ছিল। তার বদলে শিকে ছিঁড়ছে উল্টোডাঙার বিধান শিশু উদ্যানে।

নারকেল গাছে ঘেরা ২২ বিঘার পুকুরে গড়ে উঠছে রকমারি দেশি মাছের আঁতুড়ঘর। স্বাদু, স্বাস্থ্যকর মাছের চাষ ও বিপণনের পরিকল্পনা ছকে ফেলেছে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার জানাচ্ছেন, বর্ষার আগেই জল ছেঁচে শুরু হবে কাজ। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাসের সঙ্গে আলোচনায় কাগজে-কলমে প্রকল্পটি চূড়ান্ত।

‘‘বাংলার অজস্র হারানো মাছের দিন ফেরাতে সেই হারানো জলাশয়ও ফিরিয়ে আনা চাই। এ জন্য বড় পুকুর বা দিঘি দরকার। পুরোপুরি প্রাকৃতিক উপাদানে ভরপুর অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা জরুরি’’— বলছেন প্রবীণ মৎস্যবিজ্ঞানী অমলেশ চৌধুরী। বিজ্ঞানীদের মতে, বহু মাছের অপমৃত্যুর পিছনে দূষণ, জলবায়ুর হেরফের, চাষের জমি থেকে শহুরে বর্জ্যের উপাদানে রাসায়নিক মিশেলের দাপটই ভিলেন। ইলিশের নিকটাত্মীয় ক্রমশ দুর্লভ গঙ্গার খয়রা বা চাপিলা, দেশি পাঙাশ, দেশি মাগুর, ফলুই, রুই-কাতলা-মৃগেল, কালবাউসদের পুনর্বাসনের জন্য বিধান শিশু উদ্যানের হ্রদটিকে বেছে নিয়েছে নিগম। নলবন, রাজারহাটের গোলতলা ভেড়িতে বিক্ষিপ্ত ভাবে পাবদা, ট্যাংরার চাষ হয়েছে। কিন্তু খাস কলকাতায় বিধান শিশু উদ্যানেই এই প্রথম গোটা জলাশয়টি জৈব প্রযুক্তির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

মাছ চাষের আগে জলাশয়ের জল ছেঁচে তোলা হবে। ট্র্যাক্টর দিয়ে লেপা হবে গোবর। সর্ষে খোল, মহুয়াখোলের মতো উপাদানে তৈরি হবে মাছের জৈব আবাস। হিঞ্চে শাক, নীল-সবুজ শ্যাওলার সমারোহে মাছের স্বাস্থ্যবর্ধক নাইট্রোজেন-বিশিষ্ট খাদ্য, লতাগুল্মের অভাব থাকবে না বলে নিগম-কর্তা সৌম্যজিৎবাবুর দাবি। নিগম সূত্রে বলা হচ্ছে, পুকুর ঘেরা থাকবে কলমিলতায়। গেঁড়ি-গুগলি-শামুকও বাড়বে জলে। সব মিলিয়ে গোটা পুকুরের বাস্তুতন্ত্রই যেন ঢেলে সাজার পরিকল্পনা। সৌম্যজিৎবাবু বলছেন, ‘‘মোটামুটি ১৫ হাজার কেজি মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।’’

তবে মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, রাসায়নিক উপাদানে মাছ চাষের তুলনায় জৈব পদ্ধতিতে চটজলদি সাফল্য মেলে না। যদিও স্বাদে, খাদ্যগুণে জৈব চাষের মাছই এগিয়ে, এমনই মনে করেন বিজ্ঞানীরা। ইউরোপের জৈব ট্রাউট, স্যামনেরও বিস্তর নামডাক। বাংলার লুপ্তপ্রায় মাছের ভাঁড়ারে বৈচিত্র্য আনতেও জৈব পদ্ধতিই মুশকিল আসান। বিধান শিশু উদ্যানের জলাশয় সাত মাসের মধ্যে মাছে ভরে ওঠার কথা। কর্তাদের আশা, মীনগণ হীন হয়ে থাকবে না এ সরোবরে।

Bio farming Fish
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy