এখানেই হয় বিস্ফোরণ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
বহু বছর আগেই বিটি রোডের ধারে স্থানান্তরিত হয়েছিল থানা। যদিও গঙ্গার উল্টো দিকে ওই থানার বহু পুরনো বাড়িটি রয়ে গিয়েছিল। বর্ষায় পরিত্যক্ত ওই বাড়ির পাঁচিল হেলে পড়ায় তা ভাঙার কাজ শুরু করেছিল পুরসভা। আবর্জনা সরানোর সময়েই সেখানে বিকট আওয়াজে কেঁপে উঠল চার দিক। সেই বিস্ফোরণে জখম হন তিন শ্রমিক ও এক স্থানীয় বাসিন্দা। ঘটনাটি শনিবার দুপুরে, বরাহনগরের।
পুলিশ সূত্রের খবর, আহত তিন শ্রমিকের নাম ফরিদ আলি মোল্লা, খোকন পিয়াদা ও শরাফত গাইন। এঁদের মধ্যে ফরিদ আলি মোল্লা গুরুতর জখম হওয়ায় তাঁকে আর জি করে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুই শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ চৌধুরীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার কথায়, ‘‘বোমা কোথা থেকে এল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী ধরনের বোমা ছিল, তা জানতে বম্ব স্কোয়াড ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের খবর দেওয়া হয়েছে। জায়গাটি ঘিরে রাখা হয়েছে।’’
বরাহনগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কুঠিঘাট এলাকার হরকুমার ঠাকুর লেনের উপরে রয়েছে ব্রিটিশ আমলের ওই বাড়িটি। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, গঙ্গার ঠিক উল্টো দিকে ৩০ বছর আগে পুরনো স্থাপত্যের ওই বাড়িটিতে বরাহনগর থানা ছিল। পরে বরাহনগর থানা স্থানান্তরিত হয়ে যায় বিটি রোডে। দীর্ঘ দিন ধরেই পরিত্যক্ত ভগ্নপ্রায় বাড়ির চারপাশে গাছ, আগাছার জঙ্গল হয়ে আছে। সম্প্রতি বর্ষায় বাড়ির পিছনের পাঁচিল হেলে পড়ে। কিছুটা অংশ ভেঙেও যায়।
ওই পুরনো থানার পিছনেই রয়েছে পুলিশ কোয়ার্টার্স। পাঁচিল ভেঙে বিপদের আশঙ্কা থেকেই সেটি ভাঙার জন্য বরাহনগর থানা পুরসভাকে জানিয়েছিল। সেই মতো গত বৃহস্পতিবার থেকে পুরসভা পাঁচিল ভাঙার কাজ শুরু করে বলে জানান ওই ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর নিবেদিতা বসাক। ঘটনাস্থলে এসে তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার কাজ বন্ধ ছিল। শনিবার আবার ভাঙার কাজ করছিলেন তিন জন।’’
এ দিন ভাঙা ইট ও আবর্জনা কোদাল দিয়ে টেনে সরানোর সময়েই ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল দাস জানান, দুপুর আড়াইটে নাগাদ বিকট শব্দ, চার দিক ধোঁয়ায় ভরে যায়। তখনই বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন অভিজিৎ। বোমার স্প্লিন্টার তাঁর কপালে লাগে। তড়িঘড়ি সকলকে উদ্ধার করে প্রথমে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন বরাহনগর থানার পুলিশ ও পুর কর্তৃপক্ষ। পুরনো ওই থানার মালখানায় মজুত থাকা বোমা ফেটে ওই ঘটনা ঘটেছে, না কি কোনও দুষ্কৃতী সেখানে বোমা রেখে গিয়েছিল, তা দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy