Advertisement
E-Paper

‘পেনশন যে কোনও কর্মীর অধিকার, সরকারের দয়ার দান নয়’! রাজ্যকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাই কোর্ট

হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স দফতরের ডিরেক্টরকে মামলাকারীর পেনশনের কাগজপত্রের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। তার আরও দুই সপ্তাহের মধ্যে গারুলিয়া পুরসভা তাঁর টাকা ছাড়তে বাধ্য।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৪৬
Calcutta High Court

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পেনশন এক জন কর্মচারীর অধিকার। এটি সরকারের ‘দয়ার দান’ নয়। ইচ্ছা অনুযায়ী তা আটকে রাখা যায় না। গারুলিয়া পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মী চার বছর ধরে পেনশন না পাওয়ায় রাজ্যকে এ ভাবেই ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের নির্দেশ, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ওই কর্মীর পেনশন পাওয়া সংক্রান্ত সমস্ত সরকারি কাজ করে দিতে হবে। তার ১৫ দিনের মধ্যে পুরসভা পেনশনের টাকা অনুমোদন করবে। ৩০ দিনের মধ্যে ওই কর্মী পেনশনের টাকা না-পেলে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হবে।

হাই কোর্ট সূত্রে খবর, ১৯৮৭ সালে উত্তর ২৪ পরগনার গারুলিয়া পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর হিসাবে চাকরিতে যোগদান করেন প্রবীরকুমার ভট্টাচার্য। ৩৩ বছর ৩ মাসের চাকরিজীবন শেষে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসর নেন। তাঁর অভিযোগ, অবসরের পর থেকে নানা বাহানায় পেনশনের টাকা আটকে রেখেছে পুরসভা।

ওই টাকা পেতে তিনি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আইনজীবী শঙ্কর বিশ্বাসের বক্তব্য, নিয়ম অনুযায়ী এক জন কর্মচারী অবসর নেওয়ার পরে পেনশন, গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড-সহ অবসরকালীন টাকা পাওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে পুরসভা সময় মতো তাঁর মক্কেলের সার্ভিস বুক (চাকরির নথি) বানায়নি। ফলে তাঁর পেনশনের কাগজপত্র তৈরি ও অনুমোদনের কাজ চার বছরেরও বেশি সময় ধরে আটকে রয়েছে। পেনশনের টাকা যে দিতে দেরি হচ্ছে, তা স্বীকার করে নেয় পুরসভা।

হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এত বছর ধরে কেন ফাইল পড়ে থাকবে? আদালত বলে, ‘‘পেনশন হল কোনও কর্মচারীর অধিকার। তা সরকারের দয়ার দান নয় যে ইচ্ছামতো আটকে রাখা যাবে। পেনশনের টাকা নিয়ে দেরি করা মানে এক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর জীবিকার অধিকার (সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ) এবং সম্পত্তির অধিকার (সংবিধানের ৩০০-এ অনুচ্ছেদ) লঙ্ঘন করা।’’ বিচারপতি জানান, এক জন অবসরপ্রাপ্ত মানুষ তাঁর জীবিকা, চিকিৎসা, সংসার চালানোর জন্য পেনশনের উপর নির্ভর করেন। এত দিন টাকা না পাওয়া মানে তাঁর জীবনকে অসহনীয় করে তোলা।

হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স দফতরের ডিরেক্টরের মামলাকারীর পেনশনের কাগজপত্রের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। তার আরও দুই সপ্তাহের মধ্যে গারুলিয়া পুরসভা তাঁর টাকা ছাড়তে বাধ্য। এর পরেও টাকা না দিলে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হবে।

Calcutta High Court Pension West Bengal government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy