ঐতিহাসিক: রবীন্দ্র সরোবরে রাখা কামান।—ফাইল চিত্র।
রবীন্দ্র সরোবরে রাখা একাধিক কামানের ইতিহাসের হদিস মিলল বলে মনে করছেন কামান বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের অনুমান, সিরাজদ্দৌলার সঙ্গে ইংরেজদের কলকাতার যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল কামানগুলি।
সরোবরে সাজানো আটটি কামানের একটির দৈর্ঘ্য প্রায় আট ফুট। বাকিগুলির প্রতিটির দৈর্ঘ্য চার ফুট মতো। কামান বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুন বলেন, ‘‘সব থেকে বড় দৈর্ঘ্যের কামানটি সিরাজদ্দৌলার সঙ্গে ইংরেজদের ১৭৫৬ সালের কলকাতা যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। এত বড় কামান শহরে সচরাচর দেখা যায় না। ছোট সাতটি কামানের মতো কামান কলকাতায় অবশ্য আগেও দেখা গিয়েছে। ছোট কামানগুলিও সম্ভবত ওই যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, কামানগুলি সবই ইংল্যান্ডে তৈরি। তৈরির আনুমানিক সময় অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে খনন করে তৈরি করা হয়েছিল রবীন্দ্র সরোবর। সে সময়ে মাটি খুঁড়তে গিয়ে এই আটটি কামান উদ্ধার হয়েছিল। সরোবর তৈরির পর থেকে কামানগুলি বিক্ষিপ্ত ভাবে ওই চত্বরেই পড়েছিল। সেগুলি সাজানো ছিল না। দীর্ঘ বছর ধরে পড়ে থাকা কামানগুলি নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল বহু দিন। অনেকেই সরোবরে ঘুরতে এসে কামানগুলির ইতিহাস কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান। তাঁদের প্রশ্ন, সেখানে এগুলি এল কী করে, কোন সময়ের।
অমিতাভবাবু জানান, সেই সময়ে এত বড় কামান অন্য রাজ্য থেকে নিয়ে আসাও সমস্যার ছিল। যুদ্ধে ব্যবহৃত এত বড় কামান সচরাচর চোখে পড়ে না। তবে ছোট কামান অথবা ব্যবহৃত অস্ত্র রাজা-জমিদারেরা বংশানুক্রমে তাঁদের বাড়িতে বা নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতেন। এই শহরেও তেমন নিদর্শন মেলে। তাঁর কথায়, ইতিহাসের তথ্য বলছে, ১৭৫৬ সালের যুদ্ধে ইংরেজরা যেখানে কামান বসিয়েছিল, রবীন্দ্র সরোবর এলাকা সেই আওতায় পড়ে না। বরং টিপু সুলতানের উত্তরপুরুষ এখানে বসবাস করতেন। অমিতাভবাবুর অনুমান, তাঁরাই ১৭৫৬ সালে শহরের অন্যতম যুদ্ধস্থল ফোর্ট উইলিয়াম থেকে কামান জোগাড় করে সরোবরে রেখেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy