আরজি কর-কাণ্ডে মঙ্গলবারই সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। রাতেই মামলা সংক্রান্ত নথিপত্র হস্তান্তরিত হয়েছে। সকালে অভিযুক্তকেও নিজেদের হেফাজতে নেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। কিন্তু অভিযুক্তের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে গিয়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঘুরতে হল সিবিআইকে। প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল জোকার দিকে। জোকা ইএসআই হাসপাতালে গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে চিকিৎসকদের একাংশের। জোকার দিকে যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অভিযুক্তকে, তখন আন্দোলনের তেজ আরও বাড়ে। এমন অবস্থায় জোকা ইএসআই যাওয়ার আগেই মাঝপথে গাড়ি ঘুরিয়ে নেয় সিবিআই।
এর পর অভিযুক্তকে নিয়ে কমান্ড হাসপাতালে যান সিবিআই অফিসারেরা। কিন্তু সেখানেও হল না আরজি কর-কাণ্ডে ধৃতের স্বাস্থ্যপরীক্ষা। যদিও কমান্ড হাসপাতালে কী কারণে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা হয়নি, তা স্পষ্ট নয়। শেষে ভারতীয় রেলের বিআর সিংহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
কিন্তু জোকা ইএসআই-তে কী সমস্যা হয়েছিল? কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশেই তো তদন্তভার পেয়েছে সিবিআই। অভিযুক্তের শারীরিক পরীক্ষা করানো তো ‘রুটিন’ প্রক্রিয়া। তা হলে কেন জোকার পথে এগিয়েও গাড়ি কমান্ডের দিকে ঘোরাতে হল সিবিআই অফিসারদের? যদিও জোকা ইএসআই হাসপাতালে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি, অভিযুক্তকে জোকা ইএসআইতে নিয়ে যাওয়ার ভাবনার সঙ্গে তাঁদের বিক্ষোভের কোনও যোগ নেই। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে তাঁরা আগে থেকেই প্রতিবাদ আন্দোলন চালাচ্ছেন হাসপাতাল চত্বরে। যে সময়ে জোকার দিকে নিয়ে আসা হচ্ছিল, সেই সময় আন্দোলনের তেজ কিছুটা বেড়েছিল, এ কথা অবশ্য মানছেন জোকা ইএসআইয়ে আন্দোলনরতদের একাংশ। তবে অভিযুক্তকে নিয়ে জোকা ইএসআইতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না— এমন কোনও দাবি তাঁরা করেননি বলেই জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালেই দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের বিশেষ দল। সেই দলের সদস্যেরা বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ পৌঁছন আরজি করে। সঙ্গে ছিলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। আরজি করে সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, “মেডিক্যাল ও ফরেন্সিক দলও আমাদের সঙ্গে এসেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।” সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকরা আরজি করে পৌঁছতেই সেখানকার আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা সমস্বরে চিৎকার করতে থাকেন, “বিচার চাই”!
গত শুক্রবার ভোরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলায় সেমিনার কক্ষ থেকেই উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের দেহ। অভিযোগ, তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। আরজি করে পৌঁছে প্রথমেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা প্রবেশ করেন সেই জরুরি বিভাগের ভবনে। এখনও সেখানেই রয়েছে তদন্তকারী দল।