দুই যুবককে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোর করে আটকে রেখে সোনার গয়না এবং টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল কয়েক জন যৌনকর্মী। পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলে বিভিন্ন সূত্র মারফত অভিযুক্তদের শনাক্ত করে ওই দুই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ।
অন্য একটি ঘটনায় ঘর থেকে উদ্ধার হয় এক যৌনকর্মীর রক্তাক্ত দেহ। গলা কেটে তাঁকে খুন করে পালিয়ে গিয়েছিল দুই যুবক। তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
দু’টি ঘটনাই বড়তলা থানার সোনাগাছি এলাকার। সেখানে প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় ছিল না সিসি ক্যামেরার নজরদারি। ফলে অপরাধের তদন্তে নেমে বেগ পেতে হচ্ছিল পুলিশকে। এ বার তার সমাধানের জন্য সোনাগাছির ভিতরের বিভিন্ন রাস্তায় বসতে চলেছে সিসি ক্যামেরা। লালবাজার সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই প্রথম দফায় বসানো হবে ২০টি সিসি ক্যামেরা। পরিকল্পনা রয়েছে মোট ৫৫টি ক্যামেরা বসানোর। মূলত বড়তলা থানার উদ্যোগে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সেগুলি বসাচ্ছেন। এখন সোনাগাছির ভিতরে চারটি জায়গায় ওই ফুটেজ সংরক্ষিত হবে। তবে, ‘লাইভ’ নজরদারি করা হবে না। থাকছে না কোনও নিয়ন্ত্রণকক্ষও। শুধুমাত্র প্রয়োজন পড়লে বা অপরাধের কিনারা করতে হলে রেকর্ড হয়ে থাকা ফুটেজ দেখা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তা একমাত্র পুলিশই দেখতে পারবে বলেও সূত্রের খবর।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পুলিশ বাধার সম্মুখীন হয়েছিল। ক্যামেরা থাকলে যৌন পেশার গোপনীয়তা রক্ষায় সমস্যা হবে, এমন মতামতও উঠে আসে। কিন্তু বড়তলা থানার আধিকারিকেরা দুর্বার মহিলা সমিতিকে নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বার বার বৈঠক করে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, ক্যামেরা রাস্তায় ঢোকা ও বেরোনোর মুখে থাকবে। শুধুমাত্র পুলিশই ওই ফুটেজ দেখতে পারবে কোনও প্রয়োজনে। এক পুলিশকর্তা জানান, অন্যত্র দুষ্কর্ম করে সোনাগাছিতে লুকিয়ে থাকে অপরাধীরা। তাদের ধরতে সাহায্য করবে এই সিসি ক্যামেরা। দুর্বারের জনসংযোগ আধিকারিক মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। পুলিশ আমাদের আশ্বস্ত করেছে। ক্যামেরার জন্য কোনও যৌনকর্মীর যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে। ’’
পুলিশ সূত্রের খবর, সোনাগাছিতে কয়েক হাজার যৌনকর্মী থাকেন। সিসি ক্যামেরার ফলে তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে দিকে নজর রেখেই ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। মূলত দুর্গাচরণ মিত্র স্ট্রিট, অবিনাশ কবিরাজ স্ট্রিট, মসজিদবাড়ি লেনের মতো রাস্তায় ঢোকা ও বেরোনোর অংশকে ওই ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)