Advertisement
০৩ মে ২০২৪
China Town

চিনাপাড়ার ঐতিহ্য রক্ষায় আশ্বাস চিনা কনসালের

পুর প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে টেরিটিবাজারে ক্ষোভ আছে। কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রকল্পে টেরিটিবাজারের ঐতিহ্য রক্ষার বিষয়টি ঠাঁই পেলেও কাজ এগোয়নি।

টেরিটিবাজারের নাম সুন গির্জায় চিনা কনসাল জেনারেল এবং অন্যান্যরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

টেরিটিবাজারের নাম সুন গির্জায় চিনা কনসাল জেনারেল এবং অন্যান্যরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২২ ১০:৩৫
Share: Save:

ধূলিধূসর চিনাপাড়ার এ তল্লাটে আগেও এসেছেন তিনি। তবে অনাদরের গলিঘুঁজির ইতিহাসের অনেকটাই তাঁরও অজানা। রবিবাসরীয় সকালে টেরিটিবাজারের সাবেক নানকিং রেস্তরাঁ চত্বরে দাঁড়িয়ে চিনা কনসাল জেনারেল চা লিয়ু তাই বিস্মিত, “বলেন কী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে এসেছেন! রাজ কপূর, নার্গিসরাও এসেছিলেন। জানেন, চিনে কলকাতার বিষয়ে বইয়েও আমি নানকিংয়ের কথা পড়েছি!”

এখন ‘টুং অন চার্চ’ নামে পরিচিত নানকিং। কলকাতার সাতরঙা সংস্কৃতি মেলে ধরার মঞ্চ ‘নো ইয়র নেবার’-এর সঙ্গে কলকাতার চিনা সমাজের গাঁটছড়ায় ঐতিহ্য সফরে শামিল হয়েছিলেন কনসাল জেনারেল চা। এই কলকাতা-দর্শনে তাঁর প্রাপ্তিও উপচে পড়ল। কলকাতা বলতে নিছকই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা সন্ত পলের গির্জা নয়। ব্রিটিশ আমলের সাবেক গ্রে টাউন জুড়ে সুদৃশ্য সব গির্জা, মসজিদ, সিনাগগ বা চিনা মন্দিরগুলোও কলকাতার একটি পরিচয়। প্রথম সারির হেরিটেজ তকমাপ্রাপ্ত চিনা স্থাপত্যগুলির রুগ্‌ণ ক্ষয়াটে চেহারাতেও মুগ্ধ হতেই হয়। তবে দুশ্চিন্তাও হয় এই ঐতিহ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে। একদা মান্দারিন ভাষায় খবরের কাগজও বেরোত কলকাতা থেকে। কমতে কমতে শহরের চিনারা এখন বড়জোর ২০০০ জন। প্রাচীন মন্দিরের গায়ে খোদাই করা লেখা পড়তে পড়তে টেরিটিবাজারের চেন ইয়াও হুয়া, মাও ছি ওয়েরা আফশোস করছিলেন, সেই সব লিখনশৈলী কলকাতার চিনারা ভুলেই গিয়েছেন। শি জিনপিংয়ের কমিউনিস্ট চিনের প্রতিনিধি কনসাল জেনারেল চা বললেন, “আমরা কিন্তু চিনে সাংস্কৃতিক বহুত্বে বিশ্বাসী। বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতার ভারতীয় চিনারা অনলাইনে চাইনিজ ক্যালিগ্রাফি শিখতে চাইলে আমরা সাহায্য করব।” তবে কলকাতার চিনা ঐতিহ্য রক্ষার দায় প্রধানত এ দেশ বা রাজ্যের কর্তাব্যক্তিদের, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন চা। তিনি বলেন, “আমরা শুধু কলকাতার চিনা সমাজের সংস্কৃতির কথা বহির্বিশ্বের চিনাদের কাছে তুলে ধরতে পারি।”

পুর প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে টেরিটিবাজারে ক্ষোভ আছে। কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রকল্পে টেরিটিবাজারের ঐতিহ্য রক্ষার বিষয়টি ঠাঁই পেলেও কাজ এগোয়নি। তবে এ দিন টুং অন, নাম সুন, সি আপ প্রমুখ চিনা গির্জা ও পুরনো চিনা ক্লাবে ঘুরে মুগ্ধ ডাক্তার-গবেষক প্রদীপ্ত রায়, বেড়াচাঁপার কলেজ শিক্ষিকা নিলুফার শিরিন, রামপুরহাটের গবেষক-ছাত্র সোহেল রেজা বা তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী দীপান্বিতা সাহারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China Town Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE