বিধাননগর পুর-এলাকায় ডেঙ্গির ভয়াবহতা দেখে নড়েচড়ে বসেছে নিউ টাউনের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ হিডকো। ফাঁকা জায়গা আবর্জনামুক্ত করতে সেখানে তৈরি করা হচ্ছে ‘বুথ লেভেল সার্ভিল্যান্স সিস্টেম’। যে ব্যবস্থায় যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে উপনগরীর অবসরপ্রাপ্ত বাসিন্দাদেরও।
‘বুথ লেভেল’ কথাটির সঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থার যোগাযোগ আছে। আবর্জনা অপসারণের কাজের সঙ্গে তার নামের মিল নেই ঠিকই। তবে হিডকোর আধিকারিকেরা জানান, নির্বাচন ব্যবস্থায় বুথ পর্যায়ের আধিকারিকের কাছেই নাগরিকেরা কথা বলতে ছুটে আসেন। নিউ টাউনেও সে ভাবেই জঞ্জাল অপসারণ ব্যবস্থা গড়তে চাওয়া হচ্ছে। যাতে নাগরিকেরা পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত সমস্যার কথা হিডকোকে নিয়মিত জানাতে পারেন। তাই এই ব্যবস্থার নাম দেওয়া হচ্ছে ‘বুথ লেভেল সার্ভিল্যান্স’।
বর্তমানে নিউ টাউনে ৫০ হাজার লোকের বসবাস। প্রতিদিন যাতায়াত রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ মানুষের। সকালে রাস্তার পাশের আবর্জনার পাত্র থেকে জঞ্জাল সংগ্রহ হলেও সমস্যা বাধায় ফাঁকা জায়গাগুলি। নিউ টাউনে ফাঁকা প্লটের সংখ্যা বেশি। নজরদারি না থাকায় সেগুলি ব্যবহৃত কাগজের কাপ, চায়ের ভাঁড়, ডাবের খোলায় ভরে থাকে। তার মধ্যে বৃষ্টির জল জমার আশঙ্কা থাকে। যা ডেঙ্গির মশা জন্মানোর জন্য আদর্শ।
আধিকারিকেরা জানান, সেখানকার ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’— তিনটি অ্যাকশন এরিয়াকে কমবেশি ৫০০ মিটার পরিধির ১০০টি ‘গ্রিড’-এ ভাগ করা হবে। গ্রিড অর্থাৎ কাল্পনিক বর্গক্ষেত্রের মাপের এক-একটি জায়গা। সেই সব গ্রিডের দায়িত্বে থাকবেন হিডকোর বিভিন্ন দফতরের ১০০ থেকে ১৫০ জন কর্মী। যাঁদের কাজ হবে প্রতিদিন নিজেদের আওতায় থাকা গ্রিড এলাকায় আধ ঘণ্টা থেকে পৌনে এক ঘণ্টা নজরদারি করে চালিয়ে দেখা, কোথায় জঞ্জাল পড়ে রয়েছে। এবং তার পরে সেই তথ্য হিডকোর কন্ট্রোল রুমে জানানো। হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘আগামী সপ্তাহে হিডকোর কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। পুজোর পর থেকে পুরো প্রক্রিয়াটি চালু হয়ে যাবে।’’ এই কাজে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের যুক্ত করার কথা ভাবা হয়েছে। আধিকারিকেরা জানান, অবসরপ্রাপ্ত নাগরিকেরা হিডকো-র বিভিন্ন বৈঠকে তাঁদের নাগরিক পরিষেবায় যুক্ত করতে
অনুরোধ জানিয়েছেন।
হিডকো জানাচ্ছে, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মানুষ সারা দিনে কমবেশি ৫০০ মিটার হাঁটতে পারে। যে কারণে গ্রিডগুলির পরিধি ৫০০ মিটারের মধ্যে রাখা হচ্ছে। হিডকোর কর্মীরা দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের গ্রিডগুলিতে নজরদারি চালাবেন। আর অবসরপ্রাপ্ত নাগরিকেরা তাঁদের সুবিধা মতো নিজেদের জায়গায় ঘুরে দেখবেন— কোথায় জঞ্জাল জমে আছে, কোথায় জঙ্গল বেড়ে গিয়েছে, রাস্তার ধারের জঞ্জালের পাত্র রোজ পরিষ্কার হচ্ছে কি না। এই তথ্যগুলি তাঁরা হিডকো কর্মীদের জানালে এলাকার পরিচ্ছন্নতায় নাগরিক ও প্রশাসন দু’ তরফেরই নজরদারি থাকবে। ফলে শহর পরিষ্কার রাখা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy