সাগর বেরা
করোনার কারণে স্নাতক স্তরের কলেজ-জীবন তেমন ভাবে উপভোগ করা হয়নি তাঁর। কমার্স নিয়ে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করারও ইচ্ছে ছিল। সেই মতো সাউথ সিটি কলেজে ভর্তিও হয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, এই মাসেই চাকরিটা ছেড়ে কলেজে স্নাতকোত্তরের ক্লাস শুরু করবেন। কিন্তু কলেজ খোলার প্রথম দিনেই এক মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সাগর বেরা (২১) নামে সেই ছাত্রের। মঙ্গলবার সকাল সওয়া ৬টা নাগাদ সল্টলেকের পাশে সুকান্তনগরে এই ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, বিধাননগর (দক্ষিণ) থানা এলাকায়, চিংড়িঘাটা মোড়ের অদূরে দ্রুত গতিতে আসা একটি ট্রাক মোটরবাইকটিকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। বাইকটি চালাচ্ছিলেন কসবা রাজডাঙার বাসিন্দা, সাগরের সহকর্মী সোহম কোনার। পিছনে বসে ছিলেন সাগর। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধাক্কার অভিঘাতে প্রায় ৫০ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন সাগর। পুলিশ জখম সোহম ও সাগরকে উদ্ধার করে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাগরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনার পরেই ট্রাক নিয়ে চম্পট দেয় চালক। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ জানাচ্ছে, ঘটনাস্থলে মেট্রোর কাজের কারণে রাস্তার একাংশ তূলনামূলক ভাবে সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনার পরে এ দিন মেট্রোর তরফে রাস্তার বাঁ পাশে থাকা পাথরের ডিভাইডার ভেঙে পথ চওড়া করার কাজও শুরু হয়। এ দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায়, রাস্তায় দুপুর পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বাইকের আলোর ভাঙা অংশ, লেগে আছে রক্তের দাগ। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় সাগরের বাবা, পেশায় পালিশের ব্যবসায়ী কার্তিক বেরাকে। তিনি বলেন, ‘‘এ মাস থেকে ছেলের কলেজে এম কমের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল। রোজ বাসে করেই পাঁচ নম্বর সেক্টরে বিপিও-র অফিসে যেত। আজই সহকর্মীর বাইকে উঠেছিল। ট্রাকচালক ধরা পড়লেও ছেলে তো আর ফিরবে না!’’
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকটির চালক সোহম জানান, সাগরের বাড়ির কাছাকাছিই তিনি থাকেন। তাই সাগর এ দিন তাঁর সঙ্গে অফিস যেতে চেয়েছিলেন। সোহম বলেন, ‘‘কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সব ঘটে গেল। ট্রাকটা আমাদের পিছনেই ছিল। ধাক্কায় আমি পড়ে যাই, সাগর খানিকটা দূরে ছিটকে পড়ে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy