E-Paper

নিক্কো পার্ক থেকে রুবি, ভাঙা রাস্তা আর যানজটে নাভিশ্বাস যাত্রীদের

নিউ টাউনের দিক থেকে বাইপাস কিংবা কলকাতা যেতে বিকেলের পরে বহু গাড়িই বেরোতে চাইছে সল্টলেক হয়ে। তাতে সেখানে বাড়ছে যানজট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৫৯
অবর্ণনীয়: নিক্কো পার্ক থেকে চিংড়িঘাটা মোড় যাওয়ার রাস্তার সার্ভিস রোড। শুক্রবার, সুকান্তনগরের কাছে।

অবর্ণনীয়: নিক্কো পার্ক থেকে চিংড়িঘাটা মোড় যাওয়ার রাস্তার সার্ভিস রোড। শুক্রবার, সুকান্তনগরের কাছে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

এক কিলোমিটারেরও কম রাস্তা। কিন্তু সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের নিক্কো পার্ক থেকে চিংড়িঘাটা মোড়ের ই এম বাইপাসে সেই দূরত্ব বিকেলে পৌঁছতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতই তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে সেখানে। এক বার সেই জটে আটকে গেলে রেহাই মিলতে পেরিয়ে যাচ্ছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। বৃষ্টি হলে ভাঙাচোরা ওই রাস্তার যানজট কাটতে রাত হয়ে যাচ্ছে। ফলে, নিউ টাউনের দিক থেকে বাইপাস কিংবা কলকাতা যেতে বিকেলের পরে বহু গাড়িই বেরোতে চাইছে সল্টলেক হয়ে। তাতে সেখানে বাড়ছে যানজট।

নিক্কো পার্ক থেকে চিংড়িঘাটার মধ্যের এই সমস্যা মেটাতে চিংড়িঘাটা মোড়ের একটি বহুতল ভেঙে নতুন রাস্তা বার করার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। যাতে নিক্কো পার্কের দিক থেকে আসা গাড়িগুলিকে সায়েন্স সিটির দিকে পাঠানো সহজ হয়। নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ ও বিধাননগর পুলিশের দাবি, তারা সম্প্রতি কেএমডিএ, কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে বৈঠকও করেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, চিংড়িঘাটা মোড়ের বাড়িটির বাসিন্দাদের পুনর্বাসনও চূড়ান্ত হয়েছে।

বৃষ্টির কারণে গত দু’-তিন দিন ধরেই ওই এলাকায় গাড়ির গতি কমছিল। বৃহস্পতিবার সেই যানজট চূড়ান্ত আকার নেয়। বিকেলের পর থেকে শুরু হওয়া যানজট কাটতে রাত সাড়ে ১১টা বেজে যায়। সল্টলেকের দিকের একটি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা জানাচ্ছে, নিউ টাউনের একটি হাসপাতাল থেকে বাইপাসের ধারে কোনও হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যেতে তারা ইই ব্লকের পাশ দিয়ে খালপাড়ের রাস্তা ধরে।

বিধাননগর কমিশনারেট এবং পাঁচ নম্বর সেক্টরের প্রশাসনিক সংস্থা নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ই এম বাইপাসের সায়েন্স সিটি এবং বেলেঘাটার দিক থেকে বহু গাড়ি চিংড়িঘাটা হয়ে নিউ টাউনের দিকে যায়। বহু বিশিষ্ট নাগরিক বিমান ধরতে চিংড়িঘাটা থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টর ও নিউ টাউন হয়ে বিমানবন্দরের দিকে যান। যে কারণে বাইপাসের ওই অংশ যানজটমুক্ত রাখতে কলকাতা পুলিশ অতিরিক্ত সক্রিয় থাকে। এই কারণে চিংড়িঘাটা থেকে বাইপাসের দিকের গাড়ি ছাড়তে সময় লাগে।

বিধাননগর সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, চিংড়িঘাটা মোড়ে অতীতে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে নিক্কো পার্কের দিক থেকে বাইপাসের দিকে যাওয়ার জন্য গার্ডরেল দিয়ে একটি রাস্তা বার করা হয়েছিল। সেই রাস্তায় ঢুকে এক পথচারী দুর্ঘটনায় পড়েন। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রাস্তাটি সব সময়ে কলকাতা পুলিশ খোলে না। ফলে প্রচুর গাড়ি আটকে যায়। এ সব কারণেই চিংড়িঘাটার মুখের বাড়ি ভেঙে নতুন রাস্তা বার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতের ওই যানজটের কারণ হিসেবে সায়েন্স সিটির দিক থেকে রুবি যাওয়ার রাস্তার বেহাল দশাকেও দায়ী করেছে বিধাননগরের পুলিশ।

স্তব্ধ: যানজটে থমকে চিংড়িঘাটা মোড়।

স্তব্ধ: যানজটে থমকে চিংড়িঘাটা মোড়। —নিজস্ব চিত্র।

বাইপাসের ভাঙা রাস্তার কারণে চিংড়িঘাটা থেকে রুবি পর্যন্ত রোজ তীব্র যানজট হচ্ছে। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে পুরসভাও। মেয়র ফিরহাদ হাকিম শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে দাবি করেন, এমন টানা বৃষ্টি শহরে অতীতে হয়নি। এক ঘণ্টায় ১৮২ থেকে ২০০ মিলিমিটার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মেয়র বলেন, ‘‘বাইপাসের রাস্তা ঠিক করা হবে। ইন্টারলকিং কংক্রিট ব্লক বসিয়ে কাজ হবে। বিভিন্ন সময়ে সিইএসসি ও অন্যান্য সংস্থা রাস্তা কেটে কাজ করে। এর ফলে জল ঢুকে রাস্তা বসে যাচ্ছে। ৩১ জুলায়ের মধ্যে কেইআইআইপি-র অধীনে কলকাতার রাস্তা সংস্কার শেষ করার কথা ছিল। বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দশ দিন শুকনো আবহাওয়া পেলেই রাস্তার কোথাও খানাখন্দ থাকবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Road condition poor road condition

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy