Advertisement
E-Paper

লক্ষ্য উন্নয়ন, তবু বিপজ্জনক শহরের দুই বস্তি

২ নম্বর গুরুদাস দত্ত গার্ডেন লেনে বস্তিতে ঢুকতেই নজরে এল, প্রতিটি বাড়ির মাথার উপর দিয়ে ঝুলছে মোটা, কালো জড়ানো তারের কুণ্ডলী। সেগুলি এতটাই নীচ দিয়ে যে, হাত তুললেই তারে লেগে যাবে।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৫
ভয়াবহ: বাড়ির গা ঘেঁষে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তারের কুণ্ডলী। উল্টোডাঙার শুঁড়ির বাগানে। নিজস্ব চিত্র

ভয়াবহ: বাড়ির গা ঘেঁষে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তারের কুণ্ডলী। উল্টোডাঙার শুঁড়ির বাগানে। নিজস্ব চিত্র

মেয়র থেকে মেয়র পারিষদ সকলেই বলছেন, শহরের বস্তিগুলির মান ফেরাতে সব রকমের উদ্যোগ নেবে পুর প্রশাসন। বস্তিবাসীদের জন্য পানীয় জল, সুস্থ নিকাশি এবং আলোর সুবন্দোবস্ত করতে একগুচ্ছ প্রকল্পও হাতে নিয়েছে পুরসভা। বস্তির উন্নয়নে বরাদ্দের বাইরেও প্রতি ওয়ার্ডকে এক কোটি টাকা করে বাড়তি দেওয়া হচ্ছে।

এ সবের মধ্যেই ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল উল্টোডাঙা এলাকার শুঁড়ির বাগান, গুরুদাস দত্ত গার্ডেন লেনের মতো একাধিক বস্তিতে। ওই বস্তির বাসিন্দা কাকলি দাস, রীতা দত্তদের কথায়, ‘‘দেখছেন তো মাথার উপর দিয়ে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে গোছা গোছা বিদ্যুতের তার। তারের ভার এতটাই যে, মাথার কাছে চলে এসেছে। সব সময়ে আতঙ্ক হয়, এই বুঝি ছিঁড়ে পড়ল!’’

অভিযোগ যে অমূলক নয়, তা চোখে পড়বে ওই অঞ্চলে গেলেই। ২ নম্বর গুরুদাস দত্ত গার্ডেন লেনে বস্তিতে ঢুকতেই নজরে এল, প্রতিটি বাড়ির মাথার উপর দিয়ে ঝুলছে মোটা, কালো জড়ানো তারের কুণ্ডলী। সেগুলি এতটাই নীচ দিয়ে যে, হাত তুললেই তারে লেগে যাবে। ‘‘ঝড়বৃষ্টির সময়ে মাথার উপরে থাকা এই তারের জট ঘুম কেড়ে নেয় আমাদের’’— বললেন কাকলিরা। শুধু মাথার উপরে বিদ্যুতের তারের জটেই শেষ নয়, ওই সব তার গিয়ে মিশেছে একটি ব্লক মিটারে। যা একেবারে খোলা। তাতে কম করে হলেও ২০-২৫টি মিটার। ওই দুই বস্তিতে গোটা কয়েক ব্লক মিটার আছে। হঠাৎ করে সেখানে কারও হাত পড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

ভয়াবহ: বাড়ির গা ঘেঁষে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তারের কুণ্ডলী। নিজস্ব চিত্র

বস্তিতে থাকে অনেক শিশুরাও। মা-বাবাদের ভয় তাদের নিয়েই। খেলার ফাঁকে কখন সন্তানেরা চলে যায় ওই ব্লক মিটারের কাছে, তা নিয়ে সব সময়ে চিন্তায় থাকেন তাঁরা। বিষয়টি পুরসভার গোচরে আনেননি? জানতে চাইলে কাকলিরা বললেন, ‘‘পুরসভার অফিসার, কাউন্সিলর সকলকে জানিয়েছি। কোনও লাভ হয়নি।’’ প্রশ্ন করা হয়েছিল এলাকার কাউন্সিলর তথা স্থানীয় তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউতকে। তিনি বলেন, ‘‘ওটা সিইএসসি-র দেওয়া লাইন। অনেক দিন ধরে রয়েছে। কাউন্সিলর হয়েই ২০১৫ সালের পরে পুর ভবনে সব কাউন্সিলরদের নিয়ে ডাকা এক বৈঠকে বিষয়টি তুলেছিলাম।’’ অনিন্দ্যবাবুর দাবি, পরেও একাধিক বার বলা হয়েছে। কিন্তু কিছু লাভ হয়নি। যদিও সিইএসসি-র পক্ষে প্রবীর মিত্র বলেন, ‘‘এটা আমাদের কাজ নয়। ব্লক মিটার পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ আমরা দিই। বাকি দায়িত্ব বস্তিবাসীদের।’’

গোটা ঘটনা পরম্পরায় বিরক্ত মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভার ধারাপাড়া বস্তিতে এ ধরনের কাজ করেছে সিইএসসি। সামাজিক কর্তব্য হিসেবে। উল্টোডাঙার এই দুটো বস্তিতেও সেই কাজ করুক তারা। প্রয়োজনে আমি সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’’

Kolkata Slum KMC Firhad Hakim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy