Advertisement
E-Paper

সমন্বয় কি নিয়মরক্ষার, প্রশ্ন পুরসভার অন্দরে

পুর প্রশাসনের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে, মশার আঁতুড়ঘর ধ্বংস করতে বিল্ডিং, জঞ্জাল সাফাই, জল সরবরাহ, নিকাশি ও প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (পিএমইউ)—এই পাঁচটি দফতর সমন্বয় রক্ষা করে চলবে।

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫০
সমন্বয় সাধন নিয়ে পুর নির্দেশিকার প্রতিলিপি।

সমন্বয় সাধন নিয়ে পুর নির্দেশিকার প্রতিলিপি।

গত কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গি অভিযানে নেমে পুর দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। তাই চলতি বছরে অভিযান শুরুর আগেই দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে গুরুত্ব দিয়েছে কলকাতা পুর প্রশাসন। সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকাও জারি হয়েছে। কিন্তু তা কতটা মানা হচ্ছে, সে বিষয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে পুর প্রশাসনের অন্দরেই।

পুর প্রশাসনের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে, মশার আঁতুড়ঘর ধ্বংস করতে বিল্ডিং, জঞ্জাল সাফাই, জল সরবরাহ, নিকাশি ও প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (পিএমইউ)—এই পাঁচটি দফতর সমন্বয় রক্ষা করে চলবে। শুধু কেন্দ্রীয় ভবনেই নয়, পুরসভার ১৬টি বরো অফিসেই দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয় রাখতে বলা হয়েছে। যাতে মশা নিধনের কাজে পুর স্বাস্থ্য দফতরের সুবিধা হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে তিনটি বরোয় ওই সমন্বয় বৈঠক হয়েছে।

যদিও বৈঠক হয়েছে নিয়ম রক্ষার্থে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এমনটাই দাবি তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশের। দক্ষিণের এক তৃণমূল কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘বৈঠক হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তার পরেও তো প্রতি ওয়ার্ডে জঞ্জাল পড়ে থাকছে।’’ একাধিক এলাকায় নিয়মিত জঞ্জাল বা পুকুর পরিষ্কার হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন কাউন্সিলরেরাই। অন্য এক তৃণমূল কাউন্সিলরের মতে, ‘‘প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর একটা অভাব রয়েছেই। শুধুমাত্র একশো দিনের কর্মী দিয়ে মশা নিধন সম্ভব নয়।’’

আরও পড়ুন: তালা ভেঙে মশা দমনে ‘না’ কাউন্সিলরদের

এ প্রসঙ্গে বাম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘মশার আঁতুড়ঘর ধ্বংস করতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ রয়েছে, এমন স্বাস্থ্যকর্মীর দাবি আমরা বারবার জানিয়েছি। সেটা না হলে শুধু সমন্বয় বৈঠক করে কিছু হবে না।’’ ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘বড় এব‌ং ছোট সব ওয়ার্ডেই বর্তমানে একই সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। কিন্তু বড় ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে তাতে যথেষ্ট সমস্যা হয়। সেটা অনেক বার পুরসভাকে জানিয়েছি।’’

এ দিকে, শহরের পুকুরগুলি অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকা নিয়েও অভিযোগ জানাচ্ছেন অনেক কাউন্সিলর। পুকুরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পিএমইউ দফতরের। কী কাজ করছে সেই দফতর? নিয়ম অনুযায়ী, পুর স্বাস্থ্য দফতর মশার আঁতুড়ঘরের সন্ধান পেলে ওই জায়গা পরিষ্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট পুকুরের মালিককে বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর কথা। তারই একটি প্রতিলিপি পাঠানোর কথা পিএমইউ-কে। পিএমইউ-এর কর্মীরা সেটি ওই পুকুরের মালিককে দেখিয়ে তা পরিষ্কার করে বিনিময়ে নির্দিষ্ট খরচ ধার্য করবেন। পিএমইউ দফতরের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘এখনও আমাদের কাছে বিজ্ঞপ্তির প্রতিলিপি আসেনি। আদৌ কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে কি না, তা পুর স্বাস্থ্য দফতরকে জিজ্ঞেস করুন। ওই দফতর আমাদের জানালে আমরা পুকুর পরিষ্কার করে দেব।’’ এক পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সমন্বয় ঠিকই আছে। অহেতুক বিতর্ক খোঁজা হচ্ছে। পুরসভা ভাল কাজ করছে বলেই এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’

যদিও পুর দফতরগুলোর মধ্যে সমন্বয় কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। যার সাম্প্রতিক নজির, মশা মারতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালা ভাঙা নিয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর ও কাউন্সিলরদের মতবিরোধ।

Kolkata Municipal Corporation Administration Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy