E-Paper

পরীক্ষা-সূচি বদলাতে ‘অনুরোধ’ বিশ্ববিদ্যালয়কে, তোপ বিরোধীর

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকম এবং বিএ এলএলবি চতুর্থ সিমেস্টারের পরীক্ষা রয়েছে ২৮ তারিখ। ওই দিনই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি রয়েছে টিএমসিপি-রও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৫ ০৫:২৯
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস হওয়ায় ২৮ অগস্ট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা-সূচি নিয়ে আপত্তি তুলেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। এ বার ওই দিন পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে সমস্যা হতে পারে জানিয়ে পরীক্ষা-সূচি বদলানোর ‘অনুরোধ’ করে অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে’কে চিঠি লিখলেন রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের বিশেষ সচিব। এই প্রেক্ষিতে সরকার ও শাসক দল এক হয়ে গিয়েছে বলে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিরোধীরা। ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী উপাচার্যও। টিএমসিপি যদিও পড়ুয়া-দুর্ভোগের আশঙ্কার কথা বলে বিরোধীদের ও অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে বিঁধেছে। এই পরিস্থিতিতে বিকাশ ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সদর দফতরের মধ্যে কার্যত সংঘাত পরিস্থিতি তৈরি হল বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকম এবং বিএ এলএলবি চতুর্থ সিমেস্টারের পরীক্ষা রয়েছে ২৮ তারিখ। ওই দিনই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি রয়েছে টিএমসিপি-রও। তাই তারা পরীক্ষার দিন বদলের দাবি জানিয়েছিল। এ বার উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৮ তারিখ পরীক্ষা হলে যানজট-সহ নানা কারণে যাতায়াতের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। পরীক্ষা-সূচি বদলাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ‘অনুরোধ’ করা হয়েছে। শান্তা অবশ্য পরীক্ষা-সূচি অপরিবর্তিত রাখার পক্ষেই অনড় থেকে শুক্রবার বলেছেন, “সরকার কোনও ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচির সমর্থনে এমন চিঠি দিতে পারে, এটা ভাবতেই পারিনি! সরকার বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জনজীবন সচল রাখার কথা বলে। এই ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের দায়িত্ব নিতে পারছে না! বাম আমলে শাসক দলের প্রতি পক্ষপাত দেখা যেত। এখনকার সরকার সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।” তবে রাজ‍্যের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে সোমবার সিন্ডিকেট বৈঠক ডেকেছেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য।

এই প্রেক্ষিতে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। বাঁকুড়ায় এ দিন তিনি বলেছেন, “ওটা (২৮ অগস্ট) টিএমসিপি নয়, ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। (দিনটা) চুরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকার আর দল আলাদা না কি? পিসি-ভাইপো যা বলবেন, সকলকে তা-ই করতে হবে।” টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের অবশ্য বক্তব্য, “বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলির নিচুতলায় ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। আর অন্তর্বর্তী উপাচার্য রাজনৈতিক স্বার্থে এই কাজ করেছেন। ওঁর মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। হয়তো পুরস্কারের আশায় এই সব করছেন। আমাদের ঘোষিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন জেলা থেকে বহু মানুষ কলকাতায় আসবেন। পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হতে পারে।”

শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-ও। সংগঠনের রাজ‍্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে’র বক্তব্য, “কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ শেষ করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। সব জায়গায় গায়ের জোর চলে না, এটা ওদের বুঝতে হবে। নিজেদের ছাত্র সংগঠন ব’লে দাবি করে, পরীক্ষার দিন বদলাতে বলছে টিএমসিপি।” ডিএসও-র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়ও সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘অগণতান্ত্রিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার-হরণের প্রবণতা’ বলেছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta University Exam

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy