বিতর্কিত: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা গাড়ির কাচে লেখা ‘জয় শ্রীরাম’। —নিজস্ব চিত্র।
পরীক্ষার খাতা আনতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করছে ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা গাড়ি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কলেজগুলি থেকে খাতা আনতে যে সাতটি গাড়ি বাইরে থেকে ভাড়ায় নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে দু’টিতে লেখা রয়েছে ‘জয় শ্রীরাম’। অন্য একটিতে হনুমানের স্টিকার লাগানো আছে। গাড়িগুলিতে এর সঙ্গে লাগানো রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় লেখা বোর্ডও। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবহৃত গাড়িতে ধর্মীয় স্লোগান ও স্টিকার থাকা নিয়ে ইতিমধ্যেই ওয়াকিবহাল মহলে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের সঙ্গে এটি মেলে না বলেই অনেকের মত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় শনিবার বলেন, ‘‘খুবই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। মনে হচ্ছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের যা নীতি, তা মেনে চলা হচ্ছে না।’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআইয়ের লোকাল কমিটির সম্পাদক মাল্যবান গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আজ থেকে নয়, বহু দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে স্বাভাবিকীকরণের চেষ্টা চলছে। এর জন্য ছাত্র, শিক্ষকদের মার পর্যন্ত খেতে হয়েছে। এই ঘটনাও তেমনই। এটাকে ভুল করে হয়ে গিয়েছে ভাবলে ভুল হবে।’’ তাঁর দাবি, অবিলম্বে এই গাড়িগুলিকে প্রত্যাহার করা হোক।
ডিএসও-র কলকাতা জেলা সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘ঐতিহ্যবাহী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের ঘটনা ধর্মনিরপেক্ষতার উপরে আঘাত ছাড়া আর কিছুই নয়। এর আগেও কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে মন্দির স্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মনিরপেক্ষতার উপরে চরম আঘাত আনা হয়েছিল।’’
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস জানালেন, কিছু গাড়ি সরস্বতী প্রেস থেকে ভাড়া নেওয়া হয়। সেগুলি বিভিন্ন কলেজ থেকে পরীক্ষার খাতা আনে। পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগ থেকে গাড়িগুলিতে শুধু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় লেখা বোর্ড দেওয়া হয়। তিনি জানান, ভবিষ্যতে এ বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকা হবে। অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে গাড়ি ভাড়া নেওয়া হলেও সেখানে কোনও ধর্মেরই স্টিকার থাকা উচিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy