Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

নজরে আবাসনের পরিচারিকা ও গাড়িচালকেরা

নিউ গড়িয়ার ওই আবাসনে ১১টি টাওয়ার রয়েছে। পাঁচ নম্বর টাওয়ারের বাসিন্দা এক আমলা পুত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মঙ্গলবারই ঘোষণা হয়েছে। এর পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই আবাসন জুড়ে।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ০৪:২৮
Share: Save:

রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্তের আবাসনের পরিচারিকাদের গতিবিধি এবং স্বাস্থ্যের উপরে এ বার নজর রাখা শুরু করল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। নজর রাখা হবে আবাসনের গাড়িচালকদের উপরেও।

নিউ গড়িয়ার ওই আবাসনে ১১টি টাওয়ার রয়েছে। পাঁচ নম্বর টাওয়ারের বাসিন্দা এক আমলা পুত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মঙ্গলবারই ঘোষণা হয়েছে। এর পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই আবাসন জুড়ে। কারণ, আক্রান্ত ওই তরুণ রবিবার ইংল্যান্ড থেকে ফিরে মঙ্গলবার পর্যন্ত বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই আবাসনের ফ্ল্যাটে ছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই আবাসনের পরিচালন কমিটির তরফে বুধবার পাঁচ নম্বর টাওয়ারের সর্বত্র জীবাণুনাশক দিয়ে ধোয়া হয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই আবাসনে ছ’শোর বেশি পরিবার বসবাস করে। এক একটি পরিবারে এক বা একাধিক পরিচারিকা কাজ করেন। পাঁচ নম্বর টাওয়ারের বাসিন্দা ওই আক্রান্তের পরিবারের পরিচারিকাদের লালারস পরীক্ষার প্রথম পর্যায়ে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, পাঁচ নম্বর টাওয়ারে আরও অনেক পরিচারিকা রয়েছেন। তা ছাড়াও গোটা আবাসনে কয়েকশো পরিচারিকা কাজ করেন। যাঁদের অধিকাংশ কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদ স্মৃতি কলোনি এলাকার বাসিন্দা। সেখানে গিয়ে পরিচারিকাদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখার পরিকল্পনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল ওই কলোনিতে গিয়ে পরিবারগুলির খোঁজ করেন। একাধিক পরিচারিকার সঙ্গে কথাও বলেন। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, ওই পরিচারিকারা করোনাভাইরাস নিয়ে মোটেও সতর্ক নন। বিষয়টিকে তাঁরা খুবই সহজ ভাবে নিয়েছেন। ফলে এ নিয়ে তাঁদের কোনও হেলদোল নেই। এর

পরেই ওই এলাকায় করোনা-সচেনতনতায় প্রচার করার পরিকল্পনা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আক্রান্তের ফ্ল্যাটের পরিচারিকারা অন্য কোনও ফ্ল্যাটে কাজ করেন কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।

রবিবার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে আক্রান্ত ওই তরুণ নিজের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যে একাধিক জায়গায় গিয়েছেন, সেই সব জায়গাও নজরে রাখা হচ্ছে। আবাসনের ভিতরে কোথায় কোথায় তিনি ঘুরেছেন সে বিষয়েও খোঁজখবর করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার নিউ গড়িয়ার ওই আবাসনে গিয়ে দেখা গেল, বেশির ভাগ আবাসিক ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করে স্বেচ্ছায় কোয়রান্টিনে রয়েছেন। পরিচারিকা এবং গাড়িচালক-সহ বহিরাগতদের যাতায়াতে বুধবার থেকেই বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। আবাসনের ক্লাবটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাঁচ নম্বর ছাড়াও অন্য টাওয়ারগুলি জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘শুধু পরিচারিকারাই নন। ওই আবাসনের গাড়িচালকদেরও নামের তালিকা তৈরি করা হবে। নজর রাখা হচ্ছে আবাসন সংলগ্ন বিভিন্ন বাজার ও দোকানে।’’ তিনি জানান, ওই আবাসনে নানা কাজে আসা বহিরাগতদের আর কোথায় আনাগোনা রয়েছে, তা দেখে হচ্ছে। প্রয়োজনে সেখানে পৌঁছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা হবে। প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, আক্রান্তের আবাসনের পরিচালন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ওই এলাকায় বাজার-দোকান আপাতত ২৫ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health New Garia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE