মাস্ক ছাড়াই প্রচারে বেরিয়ে বিতর্কে তৃণমূল প্রার্থী মিনু দাস চক্রবর্তী। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
প্রচারের সময়ে মাস্ক খুলে কোভিড-বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠল বিধাননগরের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মিনু দাস চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ ঘিরে শাসকদলের সমালোচনায় মুখর হয়েছে বিরোধী দলগুলি। ঘটনা নজরে এসেছে বিধাননগরের মহকুমাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসারেরও। যদিও মিনুর দাবি, সংবাদমাধ্যমের অনুরোধে মাস্ক খুলেছিলেন তিনি। তার পরে সেই ছবি সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২২ তারিখ বিধাননগরে পুর নির্বাচন। তার আগে রবিবার প্রচারের পারদ তুঙ্গে উঠেছে সর্বত্রই। মিনু প্রচার করছিলেন ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন এলএ ব্লকে। অভিযোগ, হুড খোলা জিপে দাঁড়িয়ে প্রচারের সময়ে মিনুর মুখে মাস্ক ছিল না। এ ছাড়া, তাঁর সঙ্গে বহু মানুষকে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে বিধানসভা নির্বাচন এবং কলকাতা পুর নির্বাচনের সময়েও বহু প্রার্থীকে মাস্ক ছাড়া প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল। তা নিয়েও বিতর্ক হয়েছিল।
রাজ্যে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ এসে যাওয়ার পরে বিধাননগরের পুর নির্বাচন কতটা প্রাসঙ্গিক, তা নিয়ে সর্বত্র প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই ভোটের প্রচারে প্রার্থীর সঙ্গে কত জন থাকতে পারবেন, তার সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে। প্রচারের সময়ে মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক করেছে কমিশন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সংবাদমাধ্যমে প্রচারের সময়ে মাস্ক ছাড়া মিনুকে দেখে সমালোচনার ঝড় তুলেছে বিজেপি ও সিপিএম।
কেন এমন করলেন প্রার্থী?
মিনুর দাবি, ‘‘আমার পরিচিত সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিনিধি অনুরোধ করেছিলেন মাস্ক খুলতে। তিনি আমার প্রচারের ছবি তুলতে চাইছিলেন। তার কিছু ক্ষণের মধ্যে দেখলাম, আমি কোভিড-বিধি ভেঙে প্রচার করছি, এমন একটা খবর রটে গেল।’’ তবে মিনু এমনটাও জানিয়েছেন যে, কখনও কখনও ভোটারদের অনুরোধে কয়েক সেকেন্ডের জন্য তিনি মাস্ক খোলেন। কারণ ভোটারেরা অনেকে তাঁর মুখ দেখতে চান।
তাঁর মিছিলে লোকজনের ভিড় প্রসঙ্গে মিনুর দাবি, তিনি শাসকদলের প্রার্থী। তাই তিনি বারণ করলেও মানুষের ভিড় তাঁর সঙ্গে জড়ো হয়ে যাচ্ছে।
মিনুর দাবি নস্যাৎ করে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী প্রমিতা সাহা ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁরা নিজেরাই নিয়ম তৈরি করেন, নিজেরাই নিয়ম ভাঙেন। সন্ত্রাস করে ভোটে জেতেন। প্রশাসন চুপ করে দেখে। মাস্ক না পরায় আমাদের দলের বিধায়ককে পুরশুড়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কী করে, তা দেখার আশায় রইলাম।’’ প্রমিতা এ দিন মিনুর বিরুদ্ধে কোভিড-িবধি ভেঙে প্রচার করার অভিযোগে থানায় অভিযোগপত্র জমা দেন এবং কেস শুরু করতে অনুরোধ করেন।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পলাশ দাশ বলেন, ‘‘তৃণমূলের প্রশাসন বিধি তৈরি করছে আর তৃণমূলের নেতারা সেই বিধি ভাঙছেন। বিধি ভেঙে তাঁরা নিজেরাই সুপার স্প্রেডার ঘটনার সৃষ্টি করছেন। আশা করব নির্বাচন কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’’ বিধাননগরের রিটার্নিং অফিসার বিশ্বজিৎ পাণ্ডা বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy