Advertisement
E-Paper

সম্পত্তি লিখে দাও, নইলে জানলা দিয়ে ফেলে দেব, মাকে হুমকি ছেলের

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ১৭:৫৯
সোনারপুরের বাড়িতে বৃদ্ধা। —নিজস্ব চিত্র

সোনারপুরের বাড়িতে বৃদ্ধা। —নিজস্ব চিত্র

সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি হননি বলে ছিয়াত্তর বছরের বৃদ্ধা মাকে দোতলার জানলা দিয়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিল ছেলে। খালি হুমকি নয়, গত কয়েক মাস ধরে বৃদ্ধাকে বিভিন্ন সময়ে মারধরও করেছে ছেলে এবং পুত্রবধূ, এমনটাই অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত ছেলে-পুত্রবধূর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান ওই বৃদ্ধা। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

প্রায় ১৮ বছর আগে, প্রায় চার কাঠা জমি কিনে সোনারপুর থানা এলাকার মিশন পল্লীতে বাড়ি করেন অর্চনা কোলে। সোমবার নিজের দোতলার ঘরে বসে তিনি বলেন,“আমার স্বামী ছিলেন ব্যাঙ্ক কর্মী। ১৯৯০ সালে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর পর আমাকেই চাকরিটা নিতে বলেছিলেন স্বামীর সহকর্মীরা। আমি তখন ভেবেছিলাম চাকরিটা ছেলেদের কেউ একজন করুক।দুই ছেলেকেই বলেছিলাম।বড় ছেলে সঞ্জীব চাকরিটা পায়।”

বৃদ্ধা তখন হাওড়ার সালকিয়ায় শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। তাঁর এখনও মনে আছে কেন তিনি সেই বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। তিনি বলেন,“বড় ছেলে চাকরি পাওয়ার পর থেকে কোনও টাকা পয়সা দিত না। রোজ রোজ অশান্তি এড়াতে ছোট ছেলেকে নিয়ে সোনারপুরে জমি কিনে বাড়ি করে চলে আসি। ছোট ছেলে একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করত।”

আরও পড়ুন: আবার অটো দৌরাত্ম, যাদবপুরে চরম হেনস্থা মা-ছেলেকে

২০০০ সালে সোনারপুরে আসার পর ধীরে ধীরে নিজের জমানো টাকায় বাড়ি একতলা থেকে দোতলা করেন তিনি। কিন্তু তিনি ভাবতেও পারেননি আরও কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে তাঁর জীবনে।

অর্চনা বলেন, “২০১৫ সাল থেকেই এক মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় আমার ছোট ছেলে প্রসেনজিতের। সেই মহিলা বিবাহিতা। তাঁর ১৫ বছরের একটি মেয়েও আছে। তাই আমি অরাজি ছিলাম। তার পরেই সেই মহিলাকে ২০১৬ সালে বিয়ে করে নিয়ে আসে ছেলে।”

বৃদ্ধার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়ে যায় পুত্র এবংপুত্রবধূর সঙ্গে।অর্চনার অভিযোগ,“আমাকে একদিন গালিগালাজ করেছিল ছেলে।রাগ করে তখন আমি বাড়ি ছেলে নবদ্বীপে আশ্রমে চলে যাই।”

ছ’মাস আগে তিনি ফিরে আসেন আশ্রম থেকে। তারপর থেকেই নাকি তাঁর ওপর চাপ দিতে শুরু করে ছেলে, সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য। বৃদ্ধা বলেন, “আমি বাড়ি তৈরি করার সময় থেকে বলেছি, এই বাড়ি আমার অবর্তমানে ছোট ছেলেই পাবে। কিন্তু ছেলে আমাকে চাপ দিতে শুরু করে পুত্রবধূ পম্পাকে লিখে দেওয়ার জন্য। আমি সেটা কোনও ভাবে লিখে দেব না স্পষ্ট বলে দিয়েছিলাম।”

আরও পড়ুন: ‘এ ভাবে প্রাণটা চলে গেল?’, ডুকরে উঠলেন মনীষার মা

আর তাতেই নাকি বৃদ্ধার ওপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। তিনি বলেন, “একদিন লাঠি দিয়ে মারতে আসে ছেলে। এমনকি, নীচের বাথরুম তালা দিয়ে রাখা শুরু করে, যাতে আমি ব্যাবহার করতে না পারি। তাতেও আমাকে সম্পত্তি লিখে দিতে বাধ্য করতে না পেরে একদিন জানলা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে মেরে দেবে বলে শাসায়।”

মাথার ওপর অ্যাসবেসটসের ছাউনি। বৃদ্ধা বলেন, “বাড়ির কাজটা শেষ করতে পারিনি। কিন্তু এই বাড়ি আমার। আমি ছাড়ব না। তাই সোজা সোনারপুর থানায় গিয়েছিলাম। ওসিকে সব বলি। তিনি এক দিনের মধ্যে ছেলে প্রসেনজিৎ এবং পুত্রবধূ পম্পা সাহাকে গ্রেফতার করে। ছেলের গ্রেফতারিতে আর সত্যি বিচলিত নন তিনি। তাঁর এবার পাল্টা হুমকি, এই বাড়িতে আমি আর কাউকে ঢুকতে দেব না।

Crime Sonarpur Son Mother
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy