বিধি-ভঙ্গের একাধিক অভিযোগ ওঠার পরে রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরও কঠোর ভাবে বলবৎ করার নির্দেশিকা নতুন করে জারি করেছে রাজ্য সরকার। পরিস্থিতি বুঝে রাতের শহরে নজরদারি বাড়িয়েছে কলকাতা পুলিশও। কিন্তু শহরবাসীর একাংশের হুঁশ ফিরছে কি? শনিবার দক্ষিণ কলকাতার একাধিক জায়গা ঘুরে দেখা গেল বিধি-ভঙ্গেরই ছবি।
এসএসকেএম হাসপাতালের কাছে গুরুদ্বার সংলগ্ন হরিশ মুখার্জি রোডে রাত ১২টাতেও যেন মেলা বসেছে। দু’ধারে দাঁড়িয়ে পর পর গাড়ি, মোটরবাইক। খোলা বেশ কয়েকটি ধাবা। সেখানকার কর্মীরাই খাবার-পানীয় পৌঁছে দিচ্ছেন গাড়ি-মোটরবাইক পর্যন্ত। সেখানে সঙ্গীদের নিয়ে আসা সোনিয়া সিংহ বললেন, “রাতে ভয় নেই। দিনভর কাজের ব্যস্ততার পরে একটু খানাপিনা না হলে চলে?” কিন্তু নৈশ-বিধি চলছে যে? মাথায় লাল ফেট্টি, পরনে কালো টি-শার্ট, জিন্স পরা এক বাইক-আরোহী যুবকের প্রতিক্রিয়া— “সরকার নিয়ম করেছে। তার মানেই কি সব নিয়ম মানতে হবে?”
শরৎ বসু রোডের ধারে রয়েছে বেশ কয়েকটি ধাবা এবং রেস্তরাঁ। তাদের কয়েকটির সামনে রাত সাড়ে ১২টাতেও বেজায় ভিড়। আলো নিভিয়ে খাবার বিক্রি চলছে। কেউ খাবার-পানীয় কিনে গাড়ির বনেটে রেখেই জন্মদিন পালন করছেন। কেউ আবার সেখানেই মধ্যরাতের আড্ডা জমিয়েছেন। জন্মদিন পালন করা ভিড়টার সঙ্গে কথা বলতে গেলেন এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী। ফিরে এসে জানালেন, জন্মদিন বলে ছাড় দেওয়া হল। কয়েক মিনিটেই চলে যাবেন ওঁরা। কিন্তু কার্ফুর শহরে রাস্তায় জন্মদিন? ওই ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীর জবাব, “রেস্তরাঁটি বন্ধ করাতে যাচ্ছি। সেটা হলে ভিড়ও থাকবে না।”
রাত দেড়টায় প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে দেখা গেল, এক দিকে দাঁড়ানো পুলিশের গাড়ি, অন্য দিকে ফাস্ট ফুডের দোকানে চলছে দেদার বিক্রি। খাওয়াদাওয়ার মধ্যেই এক তরুণী বললেন, “ওই তো পুলিশ দাঁড়িয়ে, বিধিনিষেধ থাকলে ওঁরাই তো আটকাতেন! তা ছাড়া দিনের বেলা এত ভিড়ে বেরিয়ে যেখানে করোনা হচ্ছে না, সেখানে রাতের ফাঁকা শহরে খেতে বেরোলে কী হবে?”