Advertisement
E-Paper

তৃতীয় ঢেউয়েই না-ও থামতে পারে সংক্রমণ

এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিনে শুধু তৃতীয় ঢেউ আসবে ধরে পরিকল্পনা করলে তাতে ‘ফাঁক’ থেকে যাবে বলে মনে করছেন গবেষক-বিজ্ঞানীরা

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২১ ০৬:৪০
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

এই মুহূর্তে প্রবল আলোচনা চলছে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কে। যদিও আন্তর্জাতিক স্তরের গবেষক-বিজ্ঞানীদের মতে, পরবর্তী সংক্রমণ-প্রবাহ তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না-ও থাকতে পারে। অর্থাৎ, একাধিক ঢেউ আসতে পারে। ফলে তৃতীয় ঢেউকে বিচ্ছিন্ন ভাবে না দেখে করোনা সংক্রমণ রোখার ক্ষেত্রে সামগ্রিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

সময় ও পরিস্থিতি বিশেষে সেই পরিকল্পনা পরিবর্তন করা যেতেই পারে। কিন্তু তার কয়েকটি মাপকাঠি অপরিবর্তিতই রাখতে হবে। বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামীণ এলাকায় সংক্রমণ রোধের পর্যাপ্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা এবং বেশি মানুষকে প্রতিষেধক প্রদানের কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা। সর্বোপরি করোনা-বিধি সকলকে মানতে বাধ্য করা, যা জনগোষ্ঠীর একটি অংশ এখনও উপেক্ষা করে চলছে। এই জনগোষ্ঠীর দায়িত্বজ্ঞানহীনতাই সংক্রমণ ছড়ানোর পিছনে দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিনে শুধু তৃতীয় ঢেউ আসবে ধরে পরিকল্পনা করলে তাতে ‘ফাঁক’ থেকে যাবে বলে মনে করছেন গবেষক-বিজ্ঞানীরা। কারণ, তাঁদের মতে, সংক্রমণের পরবর্তী ঢেউয়ের চরিত্র, তার বিস্তার-সহ একাধিক বিষয় নির্ভর করছে সার্স কোভ-২ ভাইরাসের মিউটেশনের উপরে। এক গবেষকের কথায়, ‘‘বিশেষ করে ভারতের মতো বৃহৎ দেশে একই সঙ্গে সব জায়গায় সংক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়বে, এমনটা না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোনটা তৃতীয় ঢেউ, সেটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল।’’

সেই কারণেই গবেষকদের একাংশের স্পষ্ট সতর্কবার্তা—সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আগ বাড়িয়ে মন্তব্য বা অনুমানমূলক সিদ্ধান্তে আসা উচিত নয়। তাতে একাধিক ঢেউ এলে সামলানো মুশকিল হয়ে পড়বে। যা সার্বিক অস্থিরতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। তৃতীয় ঢেউ প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘সাউথ-ইস্ট এশিয়া রিজিয়ন অফিস’-এর কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর রাজেশ ভাটিয়া বলছেন, ‘‘কেউ বা কোনও সরকারের তরফেই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। এবং তা উচিতও হবে না।’’ কেন উচিত হবে না, তা ব্যাখ্যা করে রাজেশবাবুর বক্তব্য, ‘‘কারণ, পরবর্তী সংক্রমণ-ঢেউ (সাবসিকোয়েন্ট ওয়েভস) নির্ভর করবে সেই সময়ে বিদ্যমান (প্রিভেলিং) বা মিউটেটেড ভাইরাস স্ট্রেন, সংক্রমণপ্রবণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তার পারস্পরিক ক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট পরিবেশ ভাইরাসের পক্ষে কতটা সহায়ক, তার উপরে।’’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গঠিত ‘দ্য গ্লোবাল অ্যান্টিবায়োটিক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’-এর বোর্ড প্রধান এবং ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় ডায়নামিক্স, ইকনমিক্স অ্যান্ড পলিসি’র ডিরেক্টর রামানন লক্ষ্মীনারায়ণ জানাচ্ছেন, সংক্রমণ-প্রবাহ অনুযায়ী আরও একাধিক ‘ওয়েভ’ আসতে পারে। তবে সেই ঢেউগুলির বিস্তার বা প্রকোপ কতটা হবে, তা নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, ‘‘কারণ, এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে সংক্রমণজনিত পরিস্থিতির গুরুত্ব কতটা যথাযথ ভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে, কতটা সফল ভাবে আরও বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, করোনা-বিধি ঠিক মতো মেনে চলা হচ্ছে কি না তার উপরে।’’

ফলে আগামী সংক্রমণের প্রকোপ রোধে শুধুই প্রশাসনিক তৎপরতা বা স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলাই পর্যাপ্ত নয়। বরং তাতে নাগরিকদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy