প্রতীকী ছবি।
‘খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অক্সিজেনের নল খুলে গিয়েছে। আমি মরে যাচ্ছি!’ ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ছেলেকে খুব কষ্ট করে কথাগুলি জানিয়েছিলেন বাবা। ওই ঘটনার পরের দিনই মারা যান করোনা আক্রান্ত সেই বৃদ্ধ। তার পরেই হাসপাতালের কর্মীদের গাফিলতির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে মৃতের পরিবার।
বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে কোভিড ওয়ার্ডে গত সোমবার গভীর রাতে ভর্তি হয়েছিলেন এন্টালির বাসিন্দা স্বপন দাস (৬৮)। তাঁর ছেলে সোহমের দাবি, বুধবার বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ বাড়িতে ফোন করেন স্বপনবাবু। ভীষণ হাঁফাতে হাঁফাতে তিনি জানান, কোনও ভাবে তাঁর অক্সিজেনের নলটি খুলে গিয়েছে। কিন্তু সামনে কেউ নেই। তিনি বার বার অনুরোধ করলেও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসছেন না। স্বপনবাবু আরও জানান, তিনি শৌচাগারে গিয়েও পড়ে গিয়েছিলেন। বাবার থেকে এমন কথা শোনার পরেই তড়িঘড়ি স্বাস্থ্য দফতরের হেল্পলাইনে ফোন করেন সোহম। তিনি বলেন, ‘‘ফোন করলে ওঁরা বিষয়টি শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এর পরে আমি হাসপাতালে চলে আসি।’’
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য ভবন থেকে হাসপাতালে ফোন আসার পরে কর্তৃপক্ষ লোক পাঠিয়ে দেখেন, ঘটনাটি সত্যি। তার পরে হাসপাতালে এসে সোহম দাবি করেন, ‘‘বাবা মারা গিয়েছেন, না বেঁচে রয়েছেন— সেটুকু জানার অধিকার তো রয়েছে।’’ তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ভিডিয়ো কল করে কথা বলার অনুমতি দেন। সোহম জানান, ভিডিয়ো কলে দেখা যায়, প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্বপনবাবু। কোনও মতে এক বার ছেলের দিকে তাকালেও একটি কথাও বলতে পারেননি। ওই যুবক বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ আছে কি না জিজ্ঞাসা করায় নার্স নিজেই উত্তর দেন, ‘না, নেই।’ তার পরে কেন বাবার কাছে ফোন দিয়েছি, সেই নিয়ে প্রশ্ন করেন আমাকে।’’ কেন ওই বৃদ্ধ রোগীকে ফোন দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে হাসপাতালের কয়েক জন কর্মীও সোহমকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
এ দিন দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ মারা যান স্বপনবাবু। মোবাইলটি প্রথমে ফেরত দিতে অস্বীকার করেন কর্মীরা। পরে অবশ্য সেটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy