Advertisement
E-Paper

রাজাবাজারে অনাদরেই সি ভি রামনের পিয়ানো

রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের প্রাচীন পিয়ানোটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সি ভি রামনের নাম। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে কলকাতায় অধ্যাপনা করতে আসার পরেই সম্ভবত তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি।

মধুমিতা দত্ত ও ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২১
রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে পড়ে নোবেলজয়ীর পিয়ানো।  ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে পড়ে নোবেলজয়ীর পিয়ানো। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

বয়সে তার সমসাময়িক বা আরও পুরনো জাতভাইরা অবশ্যই আছে এ শহরে। তবে সবার ভাগ্যে নোবেলজয়ী পদার্থবিদের হাতের ছোঁয়া জোটেনি। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের মূল ভবনের দোতলার বারান্দায় পড়ে থাকা, ধুলো জমা সেই কাঠের অবয়বটির ভিন্ন গরিমা। বিষয়টি নিয়ে এত দিনে নড়েচড়ে বসে এ বার পদার্থবিদ্যা বিভাগের কর্তারা তা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের প্রাচীন পিয়ানোটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সি ভি রামনের নাম। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে কলকাতায় অধ্যাপনা করতে আসার পরেই সম্ভবত তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। উমা পরমেশ্বরনের লেখা রামন-জীবনী বলছে, ছোট থেকেই বেহালায় আগ্রহ ছিল বিজ্ঞান-সাধকের। লর্ড রেলের লেখা উনিশ শতকীয় বই ‘থিয়োরি অব সাউন্ড’-ও গভীর ভাবে প্রভাবিত করে তাঁকে। সম্ভবত তারই সূত্রে সায়েন্স কলেজের ঘরে পিয়ানোর আবাহন। বিভিন্ন তারযন্ত্রের অনুরণনের মধুর অনুভবের গাণিতিক সম্পর্ক অনুধাবনে মজেছিলেন রামন। বেহালা, বীণা ইত্যাদির সঙ্গে পিয়ানোয় হাতুড়ির ঠোকাঠুকির ধাঁচে শব্দের জন্ম নিয়ে ভাবছিলেন তিনি। সেই পিয়ানোর অবশ্য এখন দৃশ্যতই করুণ দশা। তার পায়ের পেডালটা প্রায় খসে পড়ছে। কয়েকটি অংশও আলাদা হয়ে গিয়েছে। পদার্থবিদ্যার শিক্ষিকা পারঙ্গমা সেন পিয়ানোর বাজানোর অংশটি তাঁর ঘরে এনে রেখেছেন।

পদার্থবিদ্যা বিভাগ সূত্রের খবর, সাবেক পিয়ানোটি সারাতে মির্জা গালিব স্ট্রিটের আট দশকের পুরনো বাদ্যযন্ত্র বিপণি ব্রাগাঞ্জার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ব্রাগাঞ্জা-র এখনকার কর্ণধার টোনি ব্রাগাঞ্জা কলকাতায় পিয়ানো সারাইয়ের প্রথম সারির বিশারদ বলে পরিচিত। সোমবার টোনি অবশ্য বলেন, ‘‘আমার ঠিক জানা নেই সায়েন্স কলেজ থেকে কেউ পিয়ানোর বিষয়ে যোগাযোগ করেছিল কি না! ১০০ বছরের পিয়ানো সারানো মোটেও অসম্ভব নয়। ওঁরা চাইলে অবশ্যই পিয়ানোটি আগ্রহ নিয়ে দেখব।’’

আলাদা করে রাখা পিয়ানোর একাংশ।

এ শহরেই মার্বেল প্যালেস, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলে শতাধিক বছরের পুরনো পিয়ানো আছে। ব্রাগাঞ্জাদের হাতে বহু প্রাচীন পিয়ানো নবজন্ম পেয়েছে। প্রবীণ পিয়ানো শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা ব্যারোর কথায়, ‘‘পিয়ানো অনেকটা গাড়ির মতো। যত দিন যায়, জরাগ্রস্ত হয়। তবে ১৫০ বছরের পুরনো পিয়ানোর কিছু অংশ বিলেত থেকে নিয়ে এসে ব্রাগাঞ্জাদের সাহায্যে সারাইয়ের পরে নতুন হয়ে উঠেছে, তা নিজেই দেখেছি।’’ নিজে না দেখলেও হামবুর্গের কুলীন সংস্থা এম এফ রাখ্যাল-এর বংশজাত সি ভি রামনের পিয়ানোটি নিয়ে কিছুটা আশাবাদী তিনি। পিয়ানোটির সুরক্ষায় উদগ্রীব পদার্থবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘পিয়ানোটির বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মুখে বলেছি। লিখেও জানাব। পিয়ানোটা বাঁচানোর একটা পরিকল্পনা করা দরকার।’’

Piano C V Raman Rajabazar Science College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy