E-Paper

যৌন হেনস্থার অভিযোগে জেলে বন্দি বাবা! কটাক্ষের শিকার কন্যা, ঘর থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ

বিধাননগর কমিশনারেটের লেক টাউন থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। যার জেরে মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে ওই এলাকায়। মৃতার দেহ আটকে বিক্ষোভ চলে দীর্ঘ ক্ষণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৫:৫০
এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পকসো মামলায় বাবা জেল হেফাজতে। কিন্তু অভিযোগ, সেই জন্য তার কিশোরী কন্যাকে মানসিক নিগ্রহ থেকে রেহাই দেয়নি প্রতিবেশীদের একাংশ। এমনকি, কটাক্ষ করতে ছাড়েনি স্কুলের কোনও কোনও সহপাঠীও। রাস্তায় বেরোলে, স্কুলে ঢুকলে, উড়ে আসত গঞ্জনা। কালীপুজোর পর থেকে ক্রমাগত এমন চলায় অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্রীটি। মঙ্গলবার দুপুরে বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল তার ঝুলন্ত দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছে ওই কিশোরী।

বিধাননগর কমিশনারেটের লেক টাউন থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। যার জেরে এ দিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে ওই এলাকায়। মৃতার দেহ আটকে বিক্ষোভ চলে দীর্ঘ ক্ষণ। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ছাত্রীর দেহ ময়না তদন্তে পাঠায় পুলিশ। স্থানীয় লোকজন মারধর করেন পকসো মামলার অভিযোগকারী নাবালিকার পরিবারকেও।

বিধাননগর কমিশনারেট জানায়, মৃতার বাবাকে কালীপুজোর দিন পকসো মামলায় গ্রেফতার করে লেক টাউন থানা। তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছিল প্রতিবেশী এক নাবালিকা। তার পর থেকেই ওই ব্যক্তি জেলে বন্দি। পুলিশ জানায়, মৃতার পরিবারের অভিযোগ, পকসো মামলার অভিযোগকারিণীর পরিবার ও প্রতিবেশীদের কয়েক জন ওই ঘটনার পর থেকেই মেয়েটিকে কটাক্ষ করত। এমনকি, বাবার প্রসঙ্গ টেনে এনে সহপাঠীদের কেউ কেউ তাকে টিটকিরি দিত। তারই জেরে ওই ছাত্রী অবসাদে ভুগছিল কিছু দিন ধরে।

মৃতার বাবা পেশায় গাড়িচালক। মা রান্নার কাজ করেন। মায়ের কথায়, ‘‘আমি তখন রান্নার কাজ করছি এক জায়গায়। মেয়ে স্বাভাবিক গলায় ফোন করে জানিয়েছিল, বাড়ি ফিরে গিয়েছে। খানিক বাদে আমি ওকে ফোন করি। কিন্তু বেশ কয়েক বার মেয়ে ফোন না-ধরায় এক প্রতিবেশীকে ঘরে পাঠাই। তিনি ঘরে গিয়ে বার বার দরজায় ধাক্কা দেওয়াতেও মেয়ে সাড়া দেয়নি। খবর পেয়েই বাড়িতে ছুটে যাই। পুলিশে খবর দিই। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার করে।’’ ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে ভেঙে পড়ে কার্যত গোটা এলাকা। ছাত্রীর দেহ আটকে রেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের কাছে মৃতার বাবাকে জেল থেকে ছাড়ানোর জন্য দাবি করতে থাকেন। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়।

উত্তেজিত জনতা অভিযোগ করতে থাকে, সোমবার ছাত্রীটি জেলে তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পরেও তার বাবাকে ‘ধর্ষক’ বলে ছাত্রীকে কটাক্ষ করা হয়। এ দিন ছাত্রীর মা বলেন, ‘‘আমার স্বামী জেলে। খুব কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছি। তার মধ্যে এ ভাবে আমার বড় মেয়ে চলে গেল।’’

এ দিন সন্ধ্যার পরে মামলাকারী ওই পরিবারের লোকজনকে ধরে বেদম মারধর করতে দেখা যায় প্রতিবেশী মহিলাদের। মামলাকারী নাবালিকা ও তার মাকে প্রকাশ্যে জুতো দিয়েও মারতে দেখা যায়। পরেপুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Death POCSO Case arrest lake town police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy