এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে দমদমের আর এন গুহ রোডে।
মৃতের নাম ভিকি গুহ (৩৮)। পুলিশ জানায়, মৃতের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট মিলেছে। যার প্রেক্ষিতে ওই যুবকের মৃত্যুর জন্য তাঁর স্ত্রীকে দায়ী করেছেন পরিজনেরা।
পুলিশ জেনেছে, আঠেরো বছর আগে বিয়ে হয় ভিকির। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে তাঁর স্ত্রী আলাদা থাকতেন। পরিবার সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে একা ছিলেন ভিকি। রাত ৯টা নাগাদ বাড়ি ফিরে ভিকির কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান পরিজনেরা। এর পরে খবর যায় পুলিশে। পুলিশের অনুমান, এটি আত্মহত্যার ঘটনা।
মৃতের মামা রাজীব সরকারের দাবি, ভাগ্নের মৃত্যুর পিছনে তাঁর স্ত্রীর প্ররোচনা রয়েছে। রাজীববাবুর কথায়, ‘‘পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি, ভাগ্নের মোবাইলের কললিস্ট দেখলেই মৃত্যুর পিছনে কার হাত রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে!’’
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের ঘর থেকে যে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে, সেখানেও ছত্রে ছত্রে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অভিমানী মনোভাব
স্পষ্ট হয়েছে। পেশায় হোটেল ম্যানেজার ভিকি এক জায়গায় স্ত্রীর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘‘তুমি বলতে না গলায় দড়ি দিয়ে মরো। তাই দিলাম... ১৮ বছর ৬ মাস বিয়ে হয়েছে। আলাদা আছি, ৫ বছর ৪ মাস। এক বছরে তুমি যা জ্বালা দিয়েছো, তা আমি ১৪ বছরে দিইনি।’’ ওই চিঠির উল্টো পিঠে যুবকের মায়ের প্রতি লেখা, ‘‘মা পুলিশকে বলবে, ওকে যেন বিরক্ত না করে। তুমি শুধু ওকে চিঠিটা দিয়ে দেবে। এক কপি জেরক্স করে নিও মা।’’
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে অন্য সম্পর্কও প্রভাব ফেলেছিল বলে দাবি মৃতের পরিজনেদের। সুইসাইড নোটে মৃত লিখেছেন, ‘‘বিয়ে করছ, কর। তোমায় মুক্তি দিয়ে গেলাম। আমার মানসম্মান ডুবিয়ে দিয়েছো। কী লাভ পেলে আমার ক্ষতি, বদনাম করে?’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ভিকির এ সব বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই তাঁর স্ত্রীর ভূমিকা খতিয়ে দেখার জন্য থানায় মৃতের মামা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর পরে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন মায়ের সঙ্গে দমদমের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিলপাড়ে থাকেন মৃতের স্ত্রী। এ দিন তাঁদের বাড়িতে গিয়ে মা বা মেয়ে, কাউকেই পাওয়া যায়নি। তাঁদের কোনও ফোন নম্বর দিতে পারেননি প্রতিবেশীরা।