Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Agitation

চাকরির দাবিতে বিক্ষোভের আঁচ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছেও

মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের এই আন্দোলনকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দিলে অনেক চাকরিপ্রার্থী রাস্তার উপরেই প্ল্যাকার্ড ও থালা হাতে বসে পড়েন।

মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ না হওয়ায় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছে বিক্ষোভ চাকরিপ্রার্থীদের। মঙ্গলবার।

মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ না হওয়ায় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছে বিক্ষোভ চাকরিপ্রার্থীদের। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ০৭:৩৩
Share: Save:

এক সপ্তাহ আগেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছিলেন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির এসএসসি-র মেধাতালিকায় নাম থাকা চাকরিপ্রার্থীরা। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে ঢোকার
গলির মুখে বিক্ষোভ অবস্থানে বসলেন তাঁরা।

মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের এই আন্দোলনকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দিলে অনেক চাকরিপ্রার্থী রাস্তার উপরেই প্ল্যাকার্ড ও থালা হাতে বসে পড়েন। কেউ কেউ শুয়ে পড়েও স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তিও হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবিদাওয়া পেশ না করে তাঁরা সেখান থেকে যাবেন না। শেষে কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।

বিক্ষোভকারীরা জানান, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষকতার জন্য তাঁরা ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছেন। অভিযোগ, তাঁদের নাম মেধাতালিকায় উঠলেও নিয়োগ হয়নি এখনও। অথচ তালিকায় তাঁদের পরে নাম থাকা অনেক প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। দ্রুত নিয়োগের দাবিতে ২০১৯ সালে
প্রেস ক্লাবের সামনে তাঁরা অনশন-অবস্থান করেছিলেন। শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের অনশন মঞ্চে আসেন। এক আন্দোলনকারী এ দিন বলেন, ‘‘সেই সময়ে লোকসভা ভোট সামনে চলে এসেছিল। তখন মুখ্যমন্ত্রী আমাদের অনশন মঞ্চে এসে জানান, লোকসভা ভোট কেটে গেলেই তিনি বিষয়টি দেখবেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় আমরা অনশন তুলে নিয়েছিলাম। সেই লোকসভা ভোটের পরে দু’বছর কেটে গেল। বিধানসভা ভোট চলে এল। কিন্তু কোনও প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করেননি মুখ্যমন্ত্রী।’’ আর এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘সে দিন অনশনমঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাই আমরা গত সপ্তাহে তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ অবস্থান করেছিলাম। কিন্তু পার্থবাবুও আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি।’’ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তাঁদের এক জন আহত হয়েছেন। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি সল্টলেকের করুণাময়ীতেও চলছে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন-বিক্ষোভ। ওই অবস্থান মঙ্গলবার ২২ দিনে পড়ল। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছ থেকে পুলিশ বিক্ষোভ তুলে দিলে আন্দোলনকারীরা করুণাময়ীতে ফিরে যান। করুণাময়ী ও বিকাশ ভবনের কাছে পার্শ্ব শিক্ষক-সহ কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন বিক্ষোভ আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে তাঁরা এখন সেখান থেকে উঠে গেলেও নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার অনেক আগে থেকেই চলছে। নির্বাচনী আচরণবিধি শুরু হয়ে গেলেও তাই আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করিনি।’’

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে এই বিক্ষোভ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অযোগ্য প্রার্থীদের যোগ্যতা অর্জন করার কোনও মাপকাঠি আমার জানা নেই। যাঁরা যোগ্য প্রার্থী তাঁদের ইতিমধ্যেই নিয়োগ করা হয়েছে। যাঁরা বাকি রয়েছেন তাঁদেরও নিয়োগ হবে। ২০১৯ সালে যাঁরা বিক্ষোভ-আন্দোলন করেছিলেন তাঁদের মধ্যে যাঁরা যোগ্য তাঁদের নিয়োগ হয়ে যাওয়ার কথা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে এই বিক্ষোভকারীদেরও বলছি, ভরসা রাখুন। এখন তো সামনেই নির্বাচন। নির্বাচনের মুখে দাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে এই ভাবে বিক্ষোভ দেখানো কি সৌজন্য বোধের পরিচয়? মুখ্যমন্ত্রী তো সহানুভূতিশীল।’’

এ দিকে চাকরিপ্রার্থীদের এ দিনের বিক্ষোভ নিয়ে রাইট টু এডুকেশন ফোরাম, পশ্চিমবঙ্গ-এর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনার প্রতিবাদে আন্দোলনরত স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্যানেলভুক্ত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরে পুলিশি নিগ্রহের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Agitation Jobs
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE