Advertisement
E-Paper

রক্তের আকাল, তবু বাতিল হল রক্তদান শিবির

বিভিন্ন জেলার বন্যায় পরপর বাতিল হচ্ছে রক্তদান শিবির। যার জেরে রাজ্য জুড়ে রক্তের সঙ্কট তীব্র। এই পরিস্থিতিতে কলকাতার বিভিন্ন সংগঠনকে আরও বেশি করে রক্তদান শিবির আয়োজন করার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যকর্তারা।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৪১

ডেঙ্গি-মরসুমে এমনিতেই রক্তের চাহিদা বাড়ছে। তার উপরে বিভিন্ন জেলার বন্যায় পরপর বাতিল হচ্ছে রক্তদান শিবির। যার জেরে রাজ্য জুড়ে রক্তের সঙ্কট তীব্র। এই পরিস্থিতিতে কলকাতার বিভিন্ন সংগঠনকে আরও বেশি করে রক্তদান শিবির আয়োজন করার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু বেশি শিবির তো দূরের কথা, পূর্বঘোষিত শিবিরই বাতিল করল রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন।

শুক্রবার তাদের শিবিরে এক হাজার ইউনিটেরও বেশি রক্ত সংগ্রহ করা হবে বলে আগাম জানিয়ে রেখেছিল ফেডারেশন। সেই মতো কয়েকটি সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ককে প্রস্তুত থাকতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন সকালে হঠাৎ জানানো হয়, শিবির হবে না। এর আগে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ওই শিবিরটি হওয়ার কথা ছিল। সেটিও বাতিল হয়।

ফেডারেশন সূত্রের খবর, এ দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাকাডেমি বিল্ডিংয়ে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। হাজারখানেক রক্তদাতাও জোগাড় করা করা হয়। কিন্তু হঠাৎ ঘোষণা, শিবির বাতিল হবে। উদ্যোক্তারা জানান, শিবির উদ্বোধনের কথা ছিল মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর পক্ষে রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করতে আসা সম্ভব নয়। সংগঠনের আহ্বায়ক সৌম্য বিশ্বাস বলেন, ‘‘পার্থবাবু আমাদের প্রধান উপদেষ্টা। তাঁর এই ব্যক্তিগত শোকের সময়ে তাঁর পাশে থাকতে চাই। তাই শিবির বাতিল করা হল।’’ আর এক আহ্বায়ক দিব্যেন্দু রায় বলেন, ‘‘পার্থবাবু আসতে পারবেন না। ওঁর অনুপস্থিতিতে শিবির করব না। তবে খুব শীঘ্রই আবার ফেডারেশনের তরফে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে।’’

কিন্তু মন্ত্রী অনুপস্থিত থাকার কারণে রক্তদান শিবির কেন বাতিল হবে? এটি তো সরকারি বা সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নয়। তা হলে? এর কোনও জবাব উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কয়েক সপ্তাহ আগে এক মন্ত্রী উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে ফেডারেশন আর একটি শিবির বাতিল করেছিল। পরপর এ ভাবে শিবির বাতিল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কারও ব্যক্তিগত অসুবিধা থাকতেই পারে। তিনি অনুপস্থিত থাকতে পারেন। কিন্তু এক জন উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে রক্তদান শিবির বাতিল করা কি যুক্তিসঙ্গত?

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আর জি কর, এন আর এস, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক— মোট চারটি ব্লাড ব্যাঙ্ককে জানানো হয়েছিল যে, প্রতিটি ব্যাঙ্কে প্রায় তিনশো ইউনিট রক্ত পাঠানো হবে। এই সময়ে রক্তের উপাদানগুলির চাহিদা আরও বাড়ে। তাই এই তিনশো ইউনিট রক্তের মধ্যে দুশো ইউনিট বিভাজন করে রোগীর প্রয়োজন মতো উপাদান দেওয়া হবে। ওই চারটি ব্লাড ব্যাঙ্কে এমনই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ শিবির বাতিল করার জেরে তারা সমস্যায় পড়েছে।

তবে, এ বিষয়ে সরাসরি কেউ মুখ খুলতে চাননি। একটি সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘রক্তদান শিবিরের আয়োজকেরা শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। তাই তাঁদের সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুলে বিপদে পড়তে চাই না।’’ আর এক কর্তার আশঙ্কা, এই শিবির যথেষ্ট বড়। পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত পাওয়া যেত। তাই অন্য কয়েকটি শিবিরের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আয়োজকেরা আচমকা পিছিয়ে যাওয়ায় রক্তের সমস্যা হতে পারে। সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা কুমারেশ হালদার বলেন, ‘‘সপ্তাহে প্রতি দিন ব্লাড ব্যাঙ্কের শিবির থাকে। এ দিন শিবির বাতিল হয়ে যাওয়ায় কোনও রক্ত আসেনি।’’

Dengue Blood Blood Bank ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy