Advertisement
২১ মার্চ ২০২৩
Bidhannagar Municipal Corporation

দরপত্রে সাড়া নেই, বিধাননগরে কাউন্সিলর তহবিলের কাজ ‘শিকেয়’

পুর প্রতিনিধিদের অনেকেরই অবশ্য দাবি, তাঁরা গত এক বছর ধরে ৪০-৪৫ লক্ষ এমনকি বরাদ্দের প্রায় পুরো অঙ্ক অর্থাৎ, ৫০ লক্ষ টাকার পরিকল্পনাই জমা দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি।

A Photograph of Bidhannagar Municipal Corporation

বিধাননগর পুরসভার কাজের দরপত্রে অংশ নিতে অনীহা বাড়ছে ঠিকাদারদের। ফাইল চিত্র।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:০১
Share: Save:

তাঁদের অনেকেরই পাওনা বকেয়া রয়েছে দুই থেকে আড়াই বছর। স্বভাবতই ক্ষুব্ধ ঠিকাদারদের একটা বড় অংশ। একের পর এক ডাক পড়লেও বিধাননগর পুরসভার কাজের দরপত্রে অংশ নিতে অনীহা বাড়ছে তাঁদের। যার জেরে ব্যাহত হচ্ছে পুর পরিষেবামূলক কাজ। সমস্যা সমাধানে দেরি হওয়ায় কোথাও কোথাও বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে পড়ছেন পুর প্রতিনিধিরাও।

Advertisement

বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, চলতি আর্থিক বছরের বাজেটে পুর প্রতিনিধিদের কাজের জন্য বছরে ৫০ লক্ষ টাকার তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, গত এক বছরে সিংহভাগ ওয়ার্ডেই ওই তহবিল থেকে প্রায় কোনও কাজই হয়নি। সব ক্ষেত্রেই দরপত্র ডাকার স্তর পর্যন্ত পৌঁছে কাজ থেমে গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, গত দু’-আড়াই বছর ধরে আগের কাজের প্রাপ্য টাকা বকেয়া থাকায় দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে চাইছেন না ঠিকাদারেরা। এমনকি, উচ্চতর পুর নেতৃত্বদের কারও কারও ওয়ার্ডেও একই কাজের জন্য একাধিক বার দরপত্র আহ্বান করা হলেও সাড়া মিলছে না।

পুরসভা সূত্রের খবর, সব চেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে কাউন্সিলর তহবিলের আওতাধীন কাজগুলি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাস্তার কাজ। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার দশা ভয়াবহ। তার পাশাপাশি ওই তহবিলের অধীনে নিকাশি, বস্তি উন্নয়ন, সৌন্দর্যায়ন-সহ একাধিক প্রকল্পের কাজ কবে হবে, তা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করছেন পুর প্রতিনিধিদের অনেকেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার এক ঠিকাদার বলেন, ‘‘বকেয়ার পরিমাণ প্রচুর। জরুরি ভিত্তির দু’-একটি পুরনো কাজ ছাড়া ঠিকাদারদের অনেকেই নতুন টেন্ডারে অংশ নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।’’ এর প্রভাব পড়ছে পাড়ায় সমাধান, সাধারণ প্রকল্প, ডিপিআর-সহ একাধিক ক্ষেত্রে। ফলে গোটা বিধাননগর জুড়েই পুর পরিষেবামূলক বিভিন্ন কাজ হয় অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে, অথবা শুরু হতে পারছে না।

Advertisement

যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর দাবি, ঠিকাদারেরা তাঁদের বকেয়া টাকা পাচ্ছেন এবং কাজও করছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডেই কাজ হচ্ছে। রাস্তা কাটার জন্য বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া টাকা জমা আছে পুরসভায়। যদি কোনও ওয়ার্ডে ঠিকাদার কাজ না করে থাকেন, তা হলে কাউন্সিলরের উচিত পদক্ষেপ করা। এটা পুরসভার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। কাউন্সিলর তহবিলেও টাকা রয়েছে।’’

সল্টলেক ও রাজারহাটের পুর প্রতিনিধিদের অনেকেরই অবশ্য দাবি, তাঁরা গত এক বছর ধরে ৪০-৪৫ লক্ষ এমনকি বরাদ্দের প্রায় পুরো অঙ্ক অর্থাৎ, ৫০ লক্ষ টাকার পরিকল্পনাই জমা দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। প্রথম বারের এক পুর প্রতিনিধির কথায়, ‘‘আমি বহু কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও একটি কাজও বাস্তবায়িত করতে পারিনি। মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।’’

কলকাতা লাগোয়া একটি পুর এলাকায় টাকার অভাবে যখন পরিষেবার কাজ আটকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে, তখন রাজ্য সরকারের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর জানিয়ে দিয়েছে, সরকারি খাতে বিধাননগরের জন্য বরাদ্দ অর্থ তাদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘সরকারি বিভিন্ন খাতের প্রদেয় অর্থ বিধাননগরকে দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলরের তহবিল ওঁদের নিজস্ব। ওঁদেরই বাজেট করে পুর পরিষেবার কাজ করাতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.