Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পাচার হওয়া চার কোটির গোলমরিচ বাজেয়াপ্ত

ডিআরআই সূত্রের খবর, ইন্দোনেশিয়ায় তৈরি ওই ৪ কোটি টাকা মূল্যের গোলমরিচ আইনি পথে ভারতে আমদানি করতে গেলে শুল্ক দিতে হত প্রায় ৩ কোটি টাকা। ওই টাকা ফাঁকি দিতেই গোলমরিচ পাচার করার এমন অভিনব উপায় বার করেন পাচারকারীরা। 

আটক হওয়া গোলমরিচের বস্তা। নিজস্ব চিত্র

আটক হওয়া গোলমরিচের বস্তা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০১:৪২
Share: Save:

শুল্ক দফতরের চোখে ধুলো দিয়ে ভারতে পাচার করা বিদেশি গোলমরিচ ধরা পড়ল হাওড়ার এক গুদাম থেকে। মঙ্গলবার প্রায় ৫৬ মেট্রিক টন ওজনের ওই বিদেশি গোলমরিচ (যার বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা) বাজেয়াপ্ত করেছেন ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)-এর অফিসারেরা। গোলমরিচ নিয়ে আসা ট্রাকচালক ও গুদামের কর্মীরা সে সময়ে সেখানে উপস্থিত থাকলেও পাচার চক্রের চাঁই কাউকে অবশ্য ধরা যায়নি।

ডিআরআই সূত্রের খবর, ইন্দোনেশিয়ায় তৈরি ওই ৪ কোটি টাকা মূল্যের গোলমরিচ আইনি পথে ভারতে আমদানি করতে গেলে শুল্ক দিতে হত প্রায় ৩ কোটি টাকা। ওই টাকা ফাঁকি দিতেই গোলমরিচ পাচার করার এমন অভিনব উপায় বার করেন পাচারকারীরা।

নেপালের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সামগ্রী প্রধানত কলকাতা বন্দরে নামে। সেখান থেকে কন্টেনারে করে সড়কপথে তা নেপালে যায়। ওই সব সামগ্রী ভারতের বন্দরে ঢুকলে কন্টেনার সিল করে দেয় শুল্ক দফতর। সেই সিল ভাঙা হয় নেপালে। সম্প্রতি ডিআরআই-এর কাছে খবর আসে, সিঙ্গাপুর থেকে কলকাতা বন্দরে আসছে প্লাইউড, যা নেপালে যাবে। কিন্তু জানা যায়, আদতে ওই কন্টেনারে প্লাইউডের বদলে রয়েছে গোলমরিচ। কাগজে-কলমে নেপালের জন্য প্লাইউড আনা হচ্ছে বলে উল্লেখ থাকলেও আসলে তাতে রয়েছে গোলমরিচ, যা আসছে ভারতের জন্যেই।

হাওড়ার ওই গুদামে প্রায় দু’দিন ধরে নজরদারি চালানোর পরে মঙ্গলবার সেখানে একটি কন্টেনার ঢুকতে দেখা যায়। শুল্ক দফতরের সিল অটুট রাখতে সেই কন্টেনারের দরজা কব্জা খুলে গুদামের ভিতরে নামিয়ে রাখা হয় গোলমরিচ। এর পরে ওই কন্টেনারে ভরে নেওয়া হয় প্লাইউড। এই অদলবদলের সময়েই হাতেনাতে ওই গোলমরিচ ধরে ফেলেন ডিআরআই আধিকারিকেরা। ডিআরআই হানার খবর পেয়ে গোলমরিচ ভর্তি দ্বিতীয় কন্টেনারটিকে মাঝপথে ফেলে পালান চালক। গোয়েন্দারা সেটিকেও বাজেয়াপ্ত করেন।

ডিআরআই কর্তাদের দাবি, নেপালে সম্প্রতি এত গোলমরিচ আমদানি করা হয়েছে যে, ফের এই পরিমাণে গোলমরিচ আমদানি করা হচ্ছে বলা হলে সন্দেহ তৈরি হতে পারত। তাই সেখানে গোলমরিচের বদলে প্লাইউডের উল্লেখ করা হয়। হাওড়ার গুদাম থেকে যে প্লাইউড কন্টেনারে ভর্তি করে নেপালে যাচ্ছিল, তা হয়তো কয়েক দিনের মধ্যেই ফের ভারতে ফিরে আসত। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, এর আগেও গোলমরিচ-সহ বহু সামগ্রী এ ভাবেই নেপালের নাম করে ভারতে আনা হয়েছে। যে সব সামগ্রী আইনি পথে ভারতে আনতে অনেক বেশি শুল্ক দিতে হয়, মূলত সেগুলিই এই ভাবে দেশে ঢুকছে বলে অনুমান গোয়েন্দাদের। এই পাচার চক্রের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের এজেন্টরাও জড়িত রয়েছেন বলে সন্দেহ। তবে নেপাল সরকারের অগোচরেই নেপালের নাম করে এই পাচারকাজ চলছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Smuggling Black Pepper DRI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE