Advertisement
০১ মে ২০২৪

সোনা পাচারকারী কাকা-ভাইপোর বিরুদ্ধে কফেপোসা

সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মার্চে নদিয়া থেকে ধরা পড়া ভরত বিশ্বাস নামে এক যুবকের বিরুদ্ধেও কফেপোসা প্রয়োগ করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৯ ০১:৩৭
Share: Save:

গত পাঁচ বছর ধরে কত কোটি টাকার সোনা পাচার করেছেন কাকা-ভাইপো, সে হিসেব এখনও নেই তদন্তকারীদের কাছে। অভিযুক্ত সেই জুটি অশোক ও অমিত জালানকে আগেই গ্রেফতার করেছিল ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। এ বার তাঁদের বিরুদ্ধে কফেপোসা (কনজারভেশন অব ফরেন এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড প্রিভেনশন অব স্মাগলিং অ্যাক্টিভিটিজ) আইন প্রয়োগ করল কেন্দ্র। চোরাচালান রুখতে চালু হওয়া এই আইনে অভিযুক্তকে শুনানি ছাড়া টানা এক বছর আটকে রাখা যায়। চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত কোনও ব্যক্তি বারবার ধরা পড়লে তাঁর বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করা হয়।

সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মার্চে নদিয়া থেকে ধরা পড়া ভরত বিশ্বাস নামে এক যুবকের বিরুদ্ধেও কফেপোসা প্রয়োগ করা হয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিদেশ থেকে ১০ কোটি টাকার সোনা পাচারের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

ডিআরআই সূত্রের খবর, পাঁচ বছরে ১২০ কোটি টাকার সোনা পাচারের কথা স্বীকার করেছেন সল্টলেকের অশোক এবং বাঙুরের বাসিন্দা অমিত। এর মধ্যে ১৬টি ঘটনায় ডিআরআই ৪২০ কেজি সোনা ছাড়াও ৭ লক্ষ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই অর্থের দায়ভারও স্বীকার করেছেন অশোক। গোয়েন্দাদের ধারণা, ১২০ কোটি টাকার অনেক বেশি সোনা পাচার করেছেন অশোক-অমিত, যা ধরা পড়েনি।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, কমার্সে স্নাতক অশোক প্রথমে দাঁত মাজার ব্রাশ ও কাপড় কাচার ব্রাশ বিক্রি করতেন। পরে প্রসাধনী দ্রব্য, সর্ষের তেল, শাড়ির ব্যবসা করেন। ব্যবসার কারণে আমদানি-রফতানির লাইসেন্স জোগাড় করেন। অভিযোগ, সেই সূত্রেই বাংলাদেশ, হংকং, সিঙ্গাপুর, দুবাই গিয়ে হাওয়ালার কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় অশোকের। শুরু হয় তাঁর সোনা পাচার ও হাওয়ালার কারবার। ডিআরআই সূত্রের খবর, ১৯৯৪ ও ২০০২ সালে দু’বার অশোকের বিরুদ্ধে কফেপোসা ব্যবহার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কিন্তু তাতেও টনক নড়েনি তাঁর।

ডিআরআই জানিয়েছে, পাচার হওয়া সোনা কখনও এসেছে বাংলাদেশ, কখনও ভুটান বা ব্যাঙ্কক থেকে। অভিযোগ, মূলত হাওয়ালার মাধ্যমে অশোক এই টাকা বিদেশে পাঠাতেন। ডিআরআই সূত্রের খবর, প্রতি কেজি সোনা পাচারে অশোকের লাভ হত ৫০ হাজার টাকা। যিনি সোনা আনতেন, তাঁকে কেজি প্রতি ৬ হাজার টাকা দেওয়া হত। বহুবার অশোকের লোক সোনা পাচারের সময়ে ধরা পড়লেও অশোক-অমিতের নাম কখনও সামনে আসেনি। কারণ তাঁরা এমন ভাবে পাচার চক্র চালাতেন, যাতে সোনা পাচারকারী সরাসরি তাঁদের নাম জানতে পারতেন না। কিন্তু জুনে ডানকুনির টোল প্লাজায় একটি বাস থেকে দু’কোটি ৭১ লক্ষ টাকার সোনা উদ্ধার হয়। চিনের ছাপ মারা এই সোনা ভুটান হয়ে ভারতে ঢুকেছিল। তখনই নজরে আসে কাকা-ভাইপোর কীর্তি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

crime gold smugglers COFEPOSA DRI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE