ফাইল চিত্র।
দুর্গাপ্রতিমা তৈরির সময়ে যৌনপল্লির মাটি মেশানোটাই রীতি। কিন্তু তা বলে প্রতিমার মাটিতে ধর্মীয় স্থান এবং রাজনীতির যোগ? চক্রবেড়িয়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির এ বারের পুজোয় সেই যোগসূত্রই তৈরি হতে চলেছে। নানা ধর্মস্থান এবং রাজনৈতিক দলের দফতরের মাটি ব্যবহার করে তৈরি হবে তাদের এ বারের প্রতিমা। যার সূচনা হবে আজ, রবিবার।
করোনা-যুগে সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মন খারাপ, অস্থিরতা, উদ্বেগ। সেই সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক দলাদলি এবং ধর্মীয় টানাপড়েনও। তাই সেই সব নেতিবাচক ভাবনাকে বিসর্জন দিয়ে উমার আবাহনে ইতিবাচক বার্তা দিতেই এমন উদ্যোগ ভবানীপুর এলাকার ওই পুজো কমিটির। তাদের এ বারের ৭৫তম বর্ষের পুজোয় প্রতিমা তৈরি হবে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বারের মাটি দিয়ে। সেই সঙ্গে মিশবে রাজনৈতিক দলগুলির সদর দফতরের মাটি। তৃণমূল-বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস— বাদ যাবে না কেউই। এ রাজ্যে এই রাজনৈতিক দলগুলির প্রধান দফতর থেকে মাটি নিয়ে এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন সেই দলের কর্মী-সমর্থকেরা। প্রতিমা তৈরির মাটিতে ধর্মস্থান, রাজনৈতিক দলের দফতর আর যৌনপল্লির মাটির সঙ্গে মিশবে মানবজীবনের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাওয়া স্যানিটাইজ়ারও। অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন নানা ধর্ম, নানা মতের মানুষেরা। আর মৃৎশিল্পীর স্টুডিয়োর মাটির সঙ্গে এই মাটির মেলবন্ধনেই জন্ম হবে চক্রবেড়িয়ার প্রতিমার।
কেন এমন ভাবনা? ওই পুজো কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শৈবাল রায়চৌধুরীর মতে, ‘‘আমাদের পুজো কমিটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন বিভিন্ন ধর্মের মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকেরাও। সারা বিশ্ব এখন বড় সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তাই এ সময়ে বিভেদ নয়, ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। তা থেকেই এই ভাবনা।’’
আগামী মাসে পুজোর সময়ে দেশে করোনার পরিস্থিতি কেমন থাকবে, সংক্রমণের রেখচিত্র কেমন হবে, তা আঁচ করা কার্যত অসম্ভব। তাই স্বাস্থ্য-বিধির কথা মাথায় রেখেই পুজোর পরিকল্পনা করছেন আয়োজকরা। পুষ্পাঞ্জলির সময়ে হাতে হাতে ফুল দিতে গিয়েও যাতে দূরত্ব-বিধি বজায় থাকে, সে কথা মাথায় রেখে একটি দশ ফুট হাতার বন্দোবস্ত করেছেন এই পুজোর উদ্যোক্তারা। ‘ভাঙাগড়ার খেলা, ঘটে না হোক পটে পুজো হবেই’— বার্তা দিচ্ছে চক্রবেড়িয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy